—প্রতীকী চিত্র।
ফের নজিরবিহীন দৌড় সোনার। বুধবার কলকাতার বাজারে নতুন শিখরে পৌঁছেছে দাম। এই প্রথম ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) উঠেছে ৬২,৪০০ টাকায়। সোনার বাট প্রথম বার ছুঁয়েছে ৬২,১০০ টাকা। জিএসটি যোগ করে আরও অনেক চড়া। যথাক্রমে ৬৪,২৭২ এবং ৬৩,৯৬৩ টাকা। এর আগে গত ৫ মে সেগুলির দর উঠেছিল (জিএসটি বাদে) যথাক্রমে ৬২,৩০০ এবং ৬২,০০০ টাকায়। তার পরে কিছুটা কমে। ব্যবসায়ী মহলের দাবি, এ বছর ধনতেরসে ভাল বিক্রি হয়েছে সোনার গয়না। কিন্তু এখন ছবিটা বদলাচ্ছে। দোকানে এসেও দাম দেখে ফিরে যাচ্ছেন বহু ক্রেতা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গত দু’দিনে আউন্সে ২২ ডলার বেড়ে বিশ্ব বাজারে সোনা ২০০২ ডলার ছাড়িয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশে। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের (জিজেডিসি) চেয়ারম্যান শ্যাম মেহরা বলেন, “রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলাকালীনই পশ্চিম এশিয়া উত্তপ্ত হয়েছে ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে। তার উপর মূল্যবৃদ্ধি চড়া। মানুষের সঞ্চয় কমছে। এমন অবস্থায় সোনার দাম চড়া স্বাভাবিক। রক্ষাকবচ হিসেবেই বহু মানুষ পাকা সোনা কিনছেন লগ্নির জন্য।’’
বুলিয়ন মার্চেন্ট জেজে গোল্ডের কর্তা জয় আজমেরার দাবি, আর্থিক অনিশ্চয়তা থাকলে ডলারেও লগ্নি বাড়ে। ফলে তার বর্ধিত চাহিদা দাম বাড়ায়। অবমূল্যায়ন ঘটে উন্নয়নশীল দেশগুলির মুদ্রার। যেমন টাকার ঘটছে। ফলে ভারতে বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার কমেছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তাই এখন সোনা কিনছে। তা ছাড়া, আমেরিকায় সুদ না বাড়ার ইঙ্গিতে ভাটা পড়তে শুরু করেছে বন্ডের বাজারে। সেখান থেকেও বহু লগ্নিকারী সোনায় সরছেন। ফলে তার চাহিদা আরও বাড়ায় চড়ছে দাম।
দাম বাড়ায় গয়নার বিক্রি কমছে, জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভঙ্কর সেন বলেন, এখন যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরাই শুধু কিনছেন। শখের কেনাও কমছে। একই বক্তব্য ছোট গয়নার দোকানের মালিক টগর পোদ্দার, হলদিয়ার মাঝারি মাপের গয়না বিক্রেতা মধুসূদন কুইলা এবং কলকাতায় গরানহাটার পাইকারি বিক্রেতা চিত্তরঞ্জন পাঁজার। তাঁদের দাবি, “ধনতেরসের পরে ১১-১২ দিনেই সোনা হাজার দেড়েক টাকা বেড়ে গিয়েছে। তাই গয়না বিক্রিতে আবার ভাটা।’’ ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি দীনেশ কাবরার দাবি, “বাজারে এখন ক্রেতার থেকে বিক্রেতা বেশি। লগ্নির জন্য যাঁরা আগে সোনা কিনেছেন, তাঁরা এখন তার দাম বাড়ায় মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। আর নতুন লগ্নিকারীরা দাম কমার অপেক্ষা করছেন।’’
এ দিকে, গয়নার বিক্রি বাড়াতে বিশেষ একটি পোর্টাল চালুর পরিকল্পনা করেছে জিজেডিসি। কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে বলেন, “সেখানে দেশের সমস্ত বিক্রেতারা তাঁদের গয়নার ছবি দেখাবেন। সেটা দেখে অনলাইনেই গয়না পছন্দ করে তা কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন দেশ-বিদেশের ক্রেতারা। বিজিবিএসের সভায় ওই পোর্টালের কথা আমরা জানিয়েছি। এটিকে আমরা রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy