অবশেষে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বৈঠক করতে ভারতে এল আমেরিকার প্রতিনিধি দল। সোমবার রাতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় তাদের বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্র্যান্ডন লিঞ্চ এ দেশে পা রাখেন। আজ, দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরুর কথা। ভারতীয় পণ্যে আমেরিকা শুল্ক চাপানোর পরে এটাই হবে দু’পক্ষের প্রথম বৈঠক। তবে একে ষষ্ঠ দফার আলোচনা বলতে রাজি হননি বাণিজ্য মন্ত্রকের বিশেষ সচিব এবং এ দেশের তরফে আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া রাজেশ আগরওয়াল। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, এটা হবে সেই দফার প্রস্তুতিপর্ব। সরকারি সূত্রের দাবি, আগামী ২৪ ঘণ্টাই স্থির করবে দু’দেশের মধ্যে পরবর্তী কথাবার্তা কোন পথে এগোবে। তার পরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই ভারতীয় পণ্যে গত মাসে দু’ধাপে মোট ৫০% শুল্ক চাপান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি ছিল, যত দিন না মস্কোর সঙ্গে তেল-সম্পর্কে ইতি টানবে মোদী সরকার, তত দিন চুক্তি নিয়ে কথা বলবেন না। এর জেরে ২৫ অগস্ট নয়াদিল্লিতে বাণিজ্য বৈঠক বাতিল হয়। অবশ্য গত সপ্তাহে সুর নরম করেছেন ট্রাম্প। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বন্ধু বলে ভারতের সঙ্গে ভাল সম্পর্কের বার্তা দিয়েছেন। একে স্বাগত জানিয়ে বার্তা দেন মোদীও।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, আজকের বৈঠকে আমেরিকার তরফে মোদী সরকারের থেকে রাশিয়ার তেল কেনা কমানোর প্রতিশ্রুতি চাওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, এ দেশে ইথানল তৈরিতে আমেরিকার ভুট্টা পাঠাতে আগ্রহী ওয়াশিংটন। তারা চায় লাইসেন্সের নিয়ম সরল করুক নয়াদিল্লি, এ দেশে আমেরিকার সংস্থার রফতানি বাড়াতে কমানো হোক আমদানিতে কড়াকড়ি। নয়াদিল্লি অবশ্য আগেই স্পষ্ট করেছে শুধু বাণিজ্য চুক্তি করতে চাপের মুখে মাথা নোয়ানো হবে না। আমেরিকা চাইলেও দেশের কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার খুলতে রাজি নয় তারা।
এই পরিস্থিতিতে আলোচনা কোন পথে এগোয়, সে দিকেই সব মহলের চোখ থাকবে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এক-দেড় মাস ধরে ভারতকে টানা আক্রমণ করছেন ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তারা। ট্রাম্প ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেও বিঁধেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে তাঁর আর্জি, রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারত, চিনের পণ্যে তারা ১০০% শুল্ক বসাক।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এত হুমকি ও আক্রমণ সত্ত্বে মাথা নোয়ায়নি ভারত। সেই অনড় মনোভাবেই বাধ্য হয়ে সুর নরম করেছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে দাবি করেন, নয়াদিল্লির সঙ্গে বাণিজ্যআলোচনা করছেন তাঁরা। উত্তরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একযোগে কাজের কথা জানান মোদী। তার পরে এ দিন ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের আসার কথা জানাল তাঁর সরকার।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)