হাতে আছে এক কোটি টাকা। স্টক না কি মিউচুয়াল ফান্ড, কোথায় লগ্নি করলে মিলবে বেশি রিটার্ন? আর্থিক বিশ্লেষকদের কথায়, এই প্রশ্নের জবাব লুকিয়ে আছে লভ্যাংশ এবং সুদের চক্রবৃদ্ধি হারের উপর। তা ছাড়া বিনিয়োগকারী কোথায় কত সময়ের জন্য লগ্নি করছেন, সেটাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ বছরের হিসাবে টাকার অঙ্ক কতটা বৃদ্ধি পাবে, আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
স্টক বা মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে কোনও একটিকে বাছার ক্ষেত্রে লগ্নিকারীর আর্থিক ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। তবে দু’টিতেই বিপুল লাভের সুযোগ রয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডে আবার দু’ভাবে বিনিয়োগ করা যায়। একটি হল লাম্পসাম এবং অপরটির নাম ‘সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান’ বা এসআইপি। লগ্নিকারী দ্বিতীয়টি বেছে নিলে একবারে কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। মাসে মাসে টাকা দিতে হবে তাঁকে। রিটার্নের ক্ষেত্রে এগুলির প্রভাব দেখতে পাবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
গোটা বিষয়টির একটি সহজ ব্যাখ্যা দিয়েছেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট নীতীন কৌশিক। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও ব্যক্তি এক কোটি টাকা স্টকে লগ্নি করলে প্রতি বছর আনুমানিক লভ্যাংশ বাবদ পাবে ১.৪ লক্ষ টাকা। ওই অর্থ জমা হবে তাঁর ব্যাঙ্কে। লভ্যাংশের টাকা শেয়ারে পুনর্বিনিয়োগ না করলে সেটা খুব একটা বাড়বে না। ব্যাঙ্কের থেকে সামান্য সুদ পাবেন ওই লগ্নিকারী। সে ক্ষেত্রে পাঁচ বছরে ১২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে মোট অর্থের পরিমাণ ১.৭৬ কোটিতে গিয়ে পৌঁছোনোর সম্ভাবনা রয়েছে।’’
মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে হিসাবটা কিন্তু একেবারেই অন্য। এ ক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারী ১২ শতাংশ লাভ করলে সেই টাকা জমা হবে না ব্যাঙ্কে। উল্টে লভ্যাংশ তাঁর লগ্নি করা তহবিলে যুক্ত হতে থাকবে। ফলে দ্রুত সেটা কলেবরে বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কৌশিক বলেছেন, ‘‘কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড থেকে কোনও ব্যক্তি একই পরিমাণ লভ্যাংশ অর্থাৎ ১.৪ লক্ষ টাকা পেলে, সেটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে বিনিয়োগ করে ফেলবেন তিনি। অর্থাৎ প্রতি মাসে ১১ হাজার ৬৬৬ টাকা এসআইপিতে দিতে থাকবেন ওই ব্যক্তি।’’
আরও পড়ুন:
এই হিসাবে পাঁচ বছর শেষে কোটি টাকার মিউচুয়াল ফান্ড ১.৮ কোটিতে পৌঁছোতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে চার লক্ষ টাকা বেশি উপার্জন করবেন গ্রাহক। এর জন্য আলাদা করে ব্রোকারেজ খরচ বা কর দিতে হবে না তাঁকে।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজার এবং মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে এগুলিতে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)