E-Paper

কোটি কোটি টাকার ‘অবৈধ’ লেনদেন! মাধবী-কাণ্ডে এ বার নাম জড়াল মহিন্দ্রারও

মাধবীর বিরুদ্ধে সেবি-র পদে থাকাকালীন নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন সংস্থা থেকে আয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিদেশি তহবিলে তাঁর লগ্নি এবং নিজের সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে অংশীদারি ধরে রাখা নিয়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১১
সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচ এবং মহিন্দ্রা গোষ্ঠীর কর্ণধার আনন্দ মাহিন্দ্রা।

সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচ এবং মহিন্দ্রা গোষ্ঠীর কর্ণধার আনন্দ মাহিন্দ্রা। —ফাইল ছবি।

এ বার সেবি-র কর্ণধার মাধবী পুরী বুচের স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগে নাম জড়াল মহিন্দ্রা গোষ্ঠী-সহ একাধিক সংস্থার। মঙ্গলবার কংগ্রেসের দাবি, মাধবী সেবি-র পূর্ণ সময়ের সদস্য থাকার সময়ে যখন মহিন্দ্রার বিরুদ্ধে আনা মামলার বিচার করছিলেন, তখনই তাঁর সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রি ওই গোষ্ঠী থেকে উপদেষ্টা পরিষেবা বাবদ কোটি কোটি টাকা পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ব্যক্তিগত ভাবে কয়েক কোটি টাকা ঢুকেছে সেবি কর্ণধারের স্বামী ধবল বুচের পকেটেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না, প্রশ্ন বিরোধী দলের। অধিকাংশ সংস্থা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এর আগেই মাধবীর বিরুদ্ধে সেবি-র পদে থাকাকালীন নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন সংস্থা থেকে আয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিদেশি তহবিলে তাঁর লগ্নি এবং নিজের সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে অংশীদারি ধরে রাখা নিয়ে। পাশাপাশি, মাধবীর স্বামী ধবলের ব্ল্যাকস্টোনে যোগদানের সুযোগে সংস্থাটির সুবিধা পাওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে।

এ বার কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান পবন খেরার দাবি, যে আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে মাধবীর ৯৯% শেয়ার ছিল, তারাই বিভিন্ন সংস্থাকে পরামর্শ দিয়ে আয় করেছে ২.৯৫ কোটি টাকা। তাদের মধ্যে ছিল মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা, ডক্টর রেড্ডি’জ়, পিডিলাইট, আইসিআইসিআই, সেম্বকর্প এবং বিশু লিজ়িং অ্যান্ড ফিনান্স। যারা প্রত্যেকেই সেবি-র নিয়ন্ত্রাণাধীন। এর মধ্যে মাধবী সেবি-র পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর থাকার সময়েই মহিন্দ্রা গোষ্ঠী আগোরাকে দিয়েছে ২.৫৯ কোটি টাকা। ধবল ব্যক্তিগত ভাবে তাদের থেকে পেয়েছেন ৪.৭৮ কোটি। ওই সময়ে মহিন্দ্রার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিলেন মাধবী। মহিন্দ্রার যদিও দাবি, ধবলের অভিজ্ঞতার জন্যই ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। ওই সমস্ত মামলার রায়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের অভিযোগ, ধবলের মহিন্দ্রা থেকে টাকা পাওয়া এবং মামলা মেটার সময় মিলে যায়।

পাশাপাশি, কেন্দ্রকে তোপ দেগে রমেশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কি জানেন যে মাধবী আগোরা অ্যাডভাইজ়রির ৯৯ শতাংশের মালিক এবং তিনি শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সংস্থা থেকে মোটা টাকা কমাচ্ছেন? আগোরা কী ধরনের পরামর্শ দেয়, তা আর্থিক পরামর্শ কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। আর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের কটাক্ষ, নিজের ‘বন্ধুদের’ বাঁচাতে গিয়ে সেবি-র স্বচ্ছ নিয়ন্ত্রকের ভাবমূর্তি খারাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জেনেশুনেই বুচকে নিয়োগ করা হয়েছিল কি না, তা-ও জানতে চান তিনি। আর তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের দাবি, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির তহবিলের আসল মালিকের তথ্য জানানোর মেয়াদ ক্রমাগত বাড়িয়েছেন মাধবী। এখন তিনি সমস্যায় পড়ায় ওই আদানি কাণ্ডে জড়িত মরিশাসের দুই সংস্থা স্যাটের কাছে গিয়েছে। বুচের ঘটনা নির্বাচনী বন্ড কেলেঙ্কারির থেকেও বড় বলে দাবি করেছেন মহুয়া।

এ দিকে, মঙ্গলবার কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপালের নেতৃত্বে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠক বসেছিল। সেখানে মাধবীকে সমন করার দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তার বিরোধিতা করেন বিজেপির নিশিকান্ত দুবে। সূত্রের খবর, দুবে বলেন, যদি সংস্থার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ খরচে খামতির প্রমাণ না থাকে, তা হলে পিএসি তার কর্তাদের ডাকতে পারে না। যদি পিএসি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোথাও নাক গলায়, তা হলে তার পক্ষে প্রমাণ থাকতে হবে। দুই মিলিয়ে তৃতীয় মোদী সরকারের আমলে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠকের শুরুতেই শাসক বনাম বিরোধী শিবিরের সংঘাত বেঁধেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Madhabi Puri Buch Anand Mahindra Sebi Mahindra and Mahindra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy