প্রতীকী ছবি।
অতিমারিতে আঁধার নেমেছিল ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পে (এমএসএমই)। বরাতের অভাবে বন্ধ হয়েছে বহু সংস্থার ঝাঁপ। কেন্দ্র ব্যাঙ্ক ঋণ-সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা বললেও, শর্তের গেরোয় সেই সুবিধা সকলের কাছে পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে কিছু ব্যবসা আসছে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, চাহিদার চাকায় গতি ফেরেনি, তাই পুরোদস্তুর আগের জায়গায় পৌঁছতে সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে সংশয়কে সঙ্গী করেই নতুন বছরে হাল ফেরার আশায় বুক বাঁধছে ছোট শিল্প।
ছোট শিল্পের সংগঠন ফসমি-র প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য এবং ফিসমে-র ডিজি অনিল ভরদ্বাজের দাবি, করোনার ধাক্কায় হারানো ব্যবসার বেশ খানিকটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। বহু সংস্থাই প্রাক্-করোনা পর্বের ব্যবসার কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে বিশ্বনাথবাবু জানান, বর্তমানে অনেকে যেমন লগ্নির পরিকল্পনা করছে, তেমনই অনেকে আবার ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত না-হওয়ায় সম্প্রসারণ প্রকল্প স্থগিতও রাখছে। কেউ কেউ উৎপাদন শিল্পের পরিসর ছেড়ে গুদাম নির্মাণ করে শুধুই ব্যবসার পথে পা বাড়াচ্ছে।
এই শিল্পের অপর সংগঠন ফ্যাকসি-র প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহের যদিও মতে, দেশে-বিদেশে চাহিদা এখনও যথেষ্ট নয়। তার স্থিরতাও নেই। যেমন, দুর্গাপুর অঞ্চলের যে সব ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা সেখানকার বড় ইস্পাত শিল্প বা দেশের অন্য প্রান্তে পরিকাঠামো শিল্পকে পণ্য জোগাত, তা এখনও থমকে। আবার উড়ালপুলের মতো প্রকল্পে অনেক সংস্থাই কাঠামোর নানা অংশের কাজ করত, যা বন্ধ। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশ থেকেও বরাত কার্যত নেই রাজ্যের ছোট সংস্থাগুলির একাংশের। ফলে কার্যকরী মূলধনে টান বা নতুন ঋণ পাওয়ার সমস্যা কমেনি। বড় সংস্থার কাছে বকেয়া পাওনাও দরকার মতো মিলছে না।
বিশেষত, ইস্পাত ও অন্যান্য কাঁচামালের চড়া দর নিয়ে শঙ্কিত হিতাংশুবাবু। পাশাপাশি তাঁর দাবি, কেন্দ্রের জেম-পোর্টালে কাঁচামালের এক রকম দামের প্রেক্ষিতে দরপত্রে অংশ নেওয়ার পরে তার দাম বহুগুণ বাড়ায় অনেক সময়েই সংস্থার লাভ থাকছে না। অনিল জানান, আমাদানি বন্ধ করায় অনেক কাঁচামালের দাম চড়ছে। তাঁরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীকে জানিয়েছেন।
তবে সংশয়ের মধ্যেও নতুন বছরে করোনা প্রতিষেধকের অগ্রগতি, সংক্রমণে রাশ পড়ায় নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে শিল্প। তাতে অক্সিজেন জোগাচ্ছে চিন-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে কিছু পণ্যের আমদানি বন্ধ হওয়ায় দেশীয় সংস্থাগুলির তার বাজার ধরার সম্ভাবনা এবং থমকে থাকা প্রকল্পের কাজে গতি আসার আশা। সব মিলিয়ে তাই এই বছরকেই ভারসা করে এগোতে চাইছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy