প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে শেয়ার বাজারে আসতে চলেছে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা টাটা ক্যাপিটাল। এর জন্য নিয়ম মেনে ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ বা আইপিও এনেছে তারা। সোমবার, ৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপুজোর দিন থেকে তাতে আবেদন করতে পারবেন লগ্নিকারীরা। ১৩ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির বম্বে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির কথা রয়েছে।
টাটা ক্যাপিটালের আইপিওর প্রাইস ব্যান্ড শেয়ার প্রতি ১০ টাকা ফেস ভ্যালুতে ৩১০-৩২৬ টাকা ধার্য হয়েছে। এর লটের আকার ন্যূনতম ৪৬ রেখেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। অর্থাৎ আবেদনকারীকে অন্তত ৪৬টি স্টকের জন্য লগ্নি করতে হবে। তবে তিনি ইচ্ছে করলে ৪৬-এর গুণিতকে আবেদন করতে পারেন। ৯ অক্টোবর শেয়ার বরাদ্দের দিন স্থির করেছে টাটা ক্যাপিটাল। ১০ অক্টোবর থেকে রিফান্ড প্রক্রিয়া শুরু করবে তারা।
আবেদনকারীদের মধ্যে যাঁদের নামে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থাটি শেয়ার বরাদ্দ করবে, ফেরতের পর একই দিনে তাঁদের ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে জমা হবে স্টক। বর্তমানে ধূসর বাজারে টাটা ক্যাপিটালের শেয়ারের দাম উঠেছে ১৮ টাকা। ব্রোকারেজ ফার্মগুলির অনুমান, তালিকাভুক্তির সময়ে এর প্রতিটি স্টকের দাম উঠবে অন্তত ৩৪৪ টাকা। অর্থাৎ আইপিও মূল্যের চেয়ে অন্তত ৫.৫২ শতাংশ বেশিতে দুই এক্সচেঞ্জে যাত্রা শুরু করবে টাটা গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
আইপিওর মাধ্যমে ৪৭.৫৮ কোটি শেয়ার বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে টাটা ক্যাপিটালের। এর মধ্যে নতুন স্টক থাকছে ২১ কোটি। আর ‘অফার ফর সেল’-এ (ওএফএস) ২৬.৫৮ কোটি শেয়ার রেখেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। উল্লেখ্য, টাটা ক্যাপিটালের সিংহভাগ অংশীদারি রয়েছে মূল সংস্থা টাটা সন্সের হাতে। এ বারের আইপিওর ওএফএসে টাটা সন্সের ২৩ কোটি শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। অন্য দিকে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) বিক্রি করতে পারে ৩.৫৮ কোটি স্টক।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে টাটা ক্যাপিটালের ৮৮.৬ শতাংশ অংশীদারি রয়েছে মূল সংস্থা টাটা সন্সের কাছে। সেখানে আইএফসির দখলে আছে মাত্র ১.৮ শতাংশ শেয়ার। তাদের আনা আইপিওতে ৫০ শতাংশের বেশি স্টক সংরক্ষিত থাকছে যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের (কোয়ালিফায়েড ইন্সস্টিটিউশনাল বাইয়ার বা কিইআইবি) জন্য। এ ছাড়া ১৫ শতাংশে অপ্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এবং ৩৫ শতাংশে খুচরো লগ্নিকারীরা আবেদন করতে পারবেন। কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকছে ১২ লক্ষ স্টক।
চলতি বছরের ৩১ মার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্সশিয়াল কোম্পানি (এনবিএফসি) হিসাবে টাটা ক্যাপিটালের ৭০ লক্ষ গ্রাহক রয়েছে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ২৫টির বেশি বিকল্প রয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। মূলত স্বনিযুক্ত ব্যক্তি বা ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দিয়ে থাকে তারা। এ ছাড়া বিমা এবং ক্রেডিট কার্ডের মতো তৃতীয় পক্ষের পণ্যও সরবরাহ করে থাকে টাটা ক্যাপিটাল।
আরও পড়ুন:
২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে টাটা ক্যাপিটালের কর পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩,৬৫৫ কোটি টাকা। এর ঠিক আগের অর্থবর্ষের সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি লাভ করে ৩,৩২৭ কোটি টাকা। এর রাজস্বের অঙ্কও উল্লেখযোগ্য ভাগে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫ আর্থিক বছরে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা, যা তার আগের অর্থবর্ষের ১৮ হাজার ১৭৫ কোটির চেয়ে অনেকটাই বেশি।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)