গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
আদানিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের ব্যাপারে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা শীঘ্রই। ঠিক তার আগে সূত্র জানাল, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের একটি লগ্নি তহবিলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে সেবি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে প্রথম বার প্রকাশ্যে আসা এই তথ্য নতুন করে ঘি ঢেলেছে আদানির বিরুদ্ধে দেশবাসীর একাংশের ক্ষোভে। যদিও শেয়ারমূল্য নামিয়ে সংস্থার ক্ষতি করা এবং ভাবমূর্তি নষ্টের উদ্দেশ্যে কয়েকটি বিদেশি সংবাদমাধ্যম তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করছে বলে দাবি করেছে গৌতম আদানির গোষ্ঠী। তবে বিষয়টি নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধতে কালক্ষেপ করেননি বিরোধীরা।
বুধবার কটাক্ষ ছুঁড়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের মন্তব্য, একের পর এক অনিয়ম সামনে আসার পরে বাঁচার জন্য ওই শিল্প গোষ্ঠী এখন জাতীয় পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা করছে। আর আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা নেট অ্যান্ডারসন এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার) লিখেছেন, জার্মানির প্রযুক্তি সংস্থা ওয়্যারকার্ড তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করতে গিয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করেছিল। কিন্তু শেষে সংস্থাটির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ঘটনাচক্রে, আদানিদের বিরুদ্ধে ওসিসিআরপির রিপোর্টের পিছনেও ওই সংবাদমাধ্যম রয়েছে।
গত জানুয়ারিতে হিন্ডেনবার্গ এক রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়ে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। পরে অনুসন্ধানকারী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ওসিসিআরপির রিপোর্টেও প্রায় একই দাবি করা হয়। যদিও আদানিরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সূত্রের খবর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের তহবিলটির নাম গাল্ফ এশিয়া ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। এই সংস্থারই মালিক দুবাইয়ের ব্যবসায়ী নাসের আলি শাবান আহলি। যিনি শিল্পপতি গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করা হয়েছে ওসিসিআরপির সংবাদে। সংস্থাটি আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলিতে লগ্নিও করেছে। ওসিসিআরপির অভিযোগ ছিল, আদানিদেরই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে ঘুরপথে ফের দেশে এনে সংস্থার শেয়ারে বেআইনি ভাবে লগ্নি করা হয়েছে।
এর আগে সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, ২০১৪ সালে বিদ্যুতের যন্ত্রপাতির আমদানি করতে আদানিরা বেশি টাকা মেটাচ্ছে বলে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবিকে জানিয়েছিল রাজস্ব বিষয়ক তদন্তকারী ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। সেই বাড়তি টাকা ঘুরপথে ভারতের শেয়ার বাজারে ফিরতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ২০১৭ সালে সেবি সেই তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। আদানি গোষ্ঠীর দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুরনো এবং ভিত্তিহীন কিছু অভিযোগকে নতুন ভাবে প্রকাশ করছে বিদেশি সংবাদমাধ্যম। আদতে ২০১৬ সালের মার্চে ডিআরআইয়ের একটি সাধারণ বিজ্ঞপ্তিতে ৪০টি ভারতীয় আমদানিকারী সংস্থার নাম ছিল। কিন্তু বেছে বেছে শুধু আদানি গোষ্ঠীর নামে অপপ্রচার চলছে।
এই প্রসঙ্গে রমেশের কটাক্ষ, আরও তথ্য প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় জাতীয় পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা করছে আদানিরা। তাঁর আরও দাবি, আদানিদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত যৌথ সংসদীয় কমিটিকে (জেপিসি) দিয়ে। তা হলেই প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘প্রিয়’ ব্যবসায়ীকে কী ভাবে সাহায্য করেছেন তা সামনে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy