E-Paper

জোরালো দাবি, তবু ‘পথের কাঁটা’ না সরলে সুদ কমার সম্ভাবনা ফিকে

শিল্পমহল-সহ একাংশের আশা, এই সব কিছুই তখন চাহিদা বাড়িয়ে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির বৃদ্ধিতে গতি আনতে সাহায্য করবে। অন্য অংশের মতে, সেই গুঁড়ে বালি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:২৯
শুরু হচ্ছে সুদের হার নির্ধারণের জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক।

শুরু হচ্ছে সুদের হার নির্ধারণের জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক। — প্রতীকী চিত্র।

গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার শ্লথ হয়ে ৫.৪ শতাংশে নামার পরে অবিলম্বে সুদের হার কমিয়ে সেই ঝিমুনি কাটানোর দাবি আরও জোরালো হয়েছে। যাতে পুঁজি জোগাড়ের খরচ কমায় লগ্নির সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প। তার হাত ধরে আরও কিছু মানুষের রোজগারের পথ খোলে। ঋণগ্রহীতারা সুদের খাতে বেঁচে যাওয়া বাড়তি টাকায় বাজারে কেনাকাটা বাড়াতে পারেন। শিল্পমহল-সহ একাংশের আশা, এই সব কিছুই তখন চাহিদা বাড়িয়ে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির বৃদ্ধিতে গতি আনতে সাহায্য করবে। অন্য অংশের মতে, সেই গুঁড়ে বালি। কারণ, পথের কাঁটা এখনও খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি। বাজারে খাবার-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগুন দামে হাত পুড়ছে বহু মানুষের। এখন সুদ কমালেই মূল্যবৃদ্ধির আরও চড়ার ঝুঁকি থাকবে। ফলে এত দিন ধরে দামে লাগাম পরানোর চেষ্টার শেষ পর্বে এসে তাড়াহুড়ো করে গোটাটায় জল ঢালতে চাইবে না আরবিআই। বিশেষত শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস যেহেতু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের শেষ পর্বটা সব থেকে কঠিন জানিয়ে খাদ্যপণ্যের দাম না কমলে সেই পথে না হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে সাম্প্রতিক কালে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেই সুদ কমানোর জন্য চাপ দিতে দেখা গিয়েছে। প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধির স্বার্থে সুদের হার কমানো জরুরি। এমনকি এই পথে চড়া মূল্যবৃদ্ধির বাধা দূর করতে তার হিসাব থেকে খাদ্যপণ্যকে বাদ দেওয়ার সওয়ালও করেন তিনি। পরে খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মুখেও সুদ ছাঁটাই কতটা প্রয়োজনীয়, সেই বার্তা শোনা যায়। এখন এই চাপের মুখে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক কী সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখার জন্য আগ্রহভরে অপেক্ষা করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।

কাল থেকে শুরু হচ্ছে সুদের হার নির্ধারণের জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি বৈঠক। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। ওই দিনই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন শক্তিকান্ত। বেশির ভাগ আর্থিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই দফাতেও সুদ স্থির থাকবে। মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে ২০২২-এর মে মাস থেকে গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরবিআই টানা ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছিল রেপো রেট (ব্যাঙ্কগুলিকে যে সুদে ধার দেয় আরবিআই)। তার পর থেকে তা ৬.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়ে।

বন্ধন ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যাল বলেন, ‘‘যে বিশেষ দু’টি বিষয়ের উপর সুদের হার পরিবর্তন নির্ভর করে, তা হল মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক বৃদ্ধি। মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আরবিআইয়ের হাতে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হল সুদের হার বৃদ্ধি। কিন্তু সেই মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা মাথা নামানোর পরে হালে ফের বেড়ে গিয়ে ৬.২ শতাংশে উঠেছে। যা আরবিআইয়ের বাঁধা সর্বোচ্চ সহনসীমা ৬ শতাংশের উপরে। অন্য দিকে আবার দেশের আর্থিক অগ্রগতির হার জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে নেমে এসেছে ৫.৪ শতাংশে। এই পরিস্থিতিতে সুদের হার কমানোর ঝুঁকি তারা নেবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

interest rate RBI Economy Reserve Bank of India (RBI) Bank Interest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy