ঘোর সঙ্কটে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত তুরস্কের সংস্থা সেলেবি অ্যাভিয়েশন হোল্ডিংস। ভারতে পরিষেবা বন্ধ হতেই হু-হু করে নামছে তাদের শেয়ারের দর। গত ৪৮ ঘণ্টায় ২০ শতাংশ পড়েছে সেলেবির স্টকের দাম। এই অবস্থা চলতে থাকলে তুর্কির সংস্থাটি বিপুল আর্থিক লোকসানের মুখে পড়বে। আর তাই ‘আইনি প্রতিকারের’ কথা বলে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে সেলেবি।
চলতি বছরের ১৫ মে, বৃহস্পতিবার একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভারতীয় বিমানবন্দরগুলির নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি’ (বিসিএএস)। সেখানে বলা হয়, সেলেবি অ্যাভিয়েশনের পরিষেবা এবং নিরাপত্তা ছাড়পত্র তাৎক্ষণিক ভাবে বাতিল করেছে সরকার। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তুরস্কের সংস্থাটির শেয়ারে নামে ধস। ফলে বাধ্য হয়ে একাধিক লেনদেন স্থগিত করে বোর্সা ইস্তানবুল (পড়ুন ইস্তানবুল স্টক এক্সচেঞ্জ)।
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে বিসিএএস কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করার পর সেলেবির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমে ২,২২৪ তুর্কি লিরায় নেমে আসে। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার আরও ১০ শতাংশ পড়ে যায় এর স্টকের দাম। ফলে কমতে কমতে সেলেবির শেয়ার ২,০০২ তুর্কি লিরায় পৌঁছে যায়। ভারত-পাকিস্তান ‘যুদ্ধে’ সরাসরি ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করে আঙ্কারা। তার পর থেকেই তুরস্কের প্রতি ভারতীয়দের ক্ষোভ বাড়ছিল। সেলেবির নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
তুরস্কের এই সংস্থাটির সদর দফতর রয়েছে ইস্তানবুলে। সেখান থেকে জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘নয়াদিল্লির নিরাপত্তা প্রত্যাহারের যাবতীয় প্রশাসনিক এবং আইনি রাস্তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ গত বছর (পড়ুন ২০২৪) প্রাপ্ত রাজস্বের দুই তৃতীয়াংশ ভারতের ব্যবসা থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে সেলেবি। অন্য দিকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির ভারতীয় শাখা জানিয়েছে, ‘‘আমাদের দফতর এবং পরিষেবা এ দেশের পেশাদারদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এর সঙ্গে তুরস্কের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
গত বছর ভারতে ব্যবসা করা পাঁচটা শাখা থেকে সেলেবির প্রাপ্ত রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৫৮ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার। ওই সংস্থাগুলি হল, সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া, সেলেবি জিএইচ ইন্ডিয়া, সেলেবি ন্যাস এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া, সেলেবি দিল্লি কার্গো টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট ইন্ডিয়া এবং সেলেবি জিএস চেন্নাই। তুরস্কের সংস্থাটির প্রায় ৩৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এই পাঁচটি সংস্থার কাছে।
ভারতের মোট ন’টি বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড পরিষেবার কাজ করত সেলেবি। সেগুলি হল দিল্লি, মুম্বই, কোচি, কুন্নুর, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, অহমদাবাদ, চেন্নাই এবং গোয়া। এর মধ্যে ছ’টি বিমানবন্দরে সক্রিয় ছিল সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া।