টুথপেস্ট থেকে শ্যাম্পু, প্রেশার কুকার থেকে সাইকেল, সেলাই মেশিন থেকে তৈরি জামাকাপড়— নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের দাম কিছুটা কমতে পারে। বেশ খানিকটা সস্তা হবে টেলিভিশন, এসি, গিজার, ওয়াশিং মেশিন থেকে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার। জীবন বিমা, স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামের বোঝাও হালকা হওয়ার সম্ভাবনা— এই আশা নিয়েই দেশের মানুষ জিএসটি পরিষদের বৈঠকের অপেক্ষা করছেন। বুধবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে দু’দিনের এই বৈঠক। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, জিএসটি কমিয়ে মোদী সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে। এক দিকে কেনাকাটা বাড়ানো, অন্য দিকে বিহারের বিধানসভা ভোটের আগে আমজনতার মন জয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, জিএসটি কমিয়ে মানুষকে দীপাবলির উপহার দেবেন। সেই অনুসারেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সামনে প্রস্তাব দেন মূলত ৫% ও ১৮% হার দু’টি চালু রাখার। সে ক্ষেত্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর ১৮% থেকে ৫ শতাংশে নামানোর কথা বলেছে কেন্দ্র। টিভি, এসি-র মতো বৈদ্যুতিন পণ্যে তা ২৮% থেকে কমে হবে ১৮%। হাইব্রিড গাড়ির (যা প্রথাগত জ্বালানি ও ব্যাটারিতে চলে) কর ২৮% থেকে কমে ১৮% হতে পারে। কর কমতে পারে ৩৫০ সিসি-র কম ইঞ্জিনের বাইক বা স্কুটারের। তবে বড় এসইউভি এবং বিলাসবহুল গাড়িতে জিএসটি-র উপরে বাড়তি ‘লেভি’ বসতে পারে।
একই সঙ্গে মানুষকে সুরাহা দিয়ে ব্যক্তিগত জীবন বিমা ও স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি ১৮% থেকে কমিয়ে শূন্যে নামানোর প্রস্তাব রয়েছে। কর্পোরেট সংস্থা কর্মীদের যে গোষ্ঠী বিমা দেয়, সেখানে আগের মতো ১৮% কর চাপলেও, ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’-এ সুরাহা দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিরোধী রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের প্রশ্ন, জিএসটি কমানোকে তাঁরা সমর্থন করলেও এতে হওয়া রাজস্ব লোকসান পূরণ হবে কী ভাবে? শরীর ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পণ্যে আগের মতোই চড়া কর রাখতে চান তাঁরা। এতদিন রাজ্যের লোকসান মেটাতে সেগুলিতে সেস বসত। এখন ‘লেভি’-র কথা বলেছে একাধিক রাজ্য।এসবিআই অবশ্য বলছে, কর কমানোয় কেনাকাটা বেড়ে গিয়ে রাজ্যগুলির জিএসটি আয় প্রায় ৪.১৪ লক্ষ কোটি টাকা বাড়বে। পরিষদে ক্ষতিপূরণের সমীকরণ নিয়েও কথা হবে। সূত্রে খবর, এই বৈঠকে সব সমাধান সূত্র না-ও বেরোতে পারে। ফের বৈঠক হতে পারে মাসের শেষে।
কেন্দ্রের প্রস্তাব
জিএসটির হার হবে দু’টি, ৫% ও ১৮%।
এখনকার ১২% আর ২৮% উঠে যাবে।
ক্ষতিকর পণ্যে কর হওয়ার সম্ভাবনা ৪০%।
সিংহভাগ জরুরি পণ্যে কর নামবে ৫ শতাংশে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)