Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Coronavirus

করোনা আবহে সাহায্য চেয়ে ফোন ১০০-তেও

লালবাজার সূত্রের খবর, বছরের অন্য সময়ে গার্হস্থ্য অত্যাচার, চুরি, যৌন হেনস্থা-সহ বিভিন্ন ঘটনার খবর কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে নিত্যদিন আসত।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

কারও বাড়িতে খাবার নেই। কারও ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছে। কারও বা রক্তের প্রয়োজন। লকডাউন পর্বে এমন মানুষের ‘বন্ধু’ হয়ে উঠেছে পুলিশের ১০০ ডায়াল।

লালবাজার সূত্রের খবর, বছরের অন্য সময়ে গার্হস্থ্য অত্যাচার, চুরি, যৌন হেনস্থা-সহ বিভিন্ন ঘটনার খবর কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে নিত্যদিন আসত। এখন সেই সবের পরিবর্তে খাবার, ওষুধ, রক্তের প্রয়োজনে প্রতিদিন ওই নম্বরে ফোন বেশি আসছে। সেগুলি শুনে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়েও দিচ্ছে লালবাজার।

বোলপুরের বাসিন্দা তালেবাতুল মওলা সিদ্দিকির স্বামী পারকিনসন্স রোগে ভুগছেন। সম্প্রতি তাঁর ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আশপাশে কোথাও না পেয়ে দিন কয়েক আগে বাধ্য হয়ে তালেবাতুল স্বামীর ওষুধের খোঁজে ১০০ ডায়ালে ফোন করেছিলেন। রবিবার বোলপুর থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘বোলপুরে হন্যে হয়ে খুঁজেও স্বামীর ওষুধ পাইনি। ১০০ ডায়ালে পুলিশকে ফোন করলে তারা উত্তর কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। শীঘ্রই ওষুধ বোলপুরে পাঠানো হবে বলে সংস্থার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।’’

বৃহস্পতিবার রাত থেকে হাতিবাগানের বাসিন্দা, বছর চুরাশির সুবোধচন্দ্র দে-র মলদ্বার থেকে রক্ত বেরোতে থাকে। বাড়িতে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী ছাড়া কেউ থাকেন না। একমাত্র ছেলে বিদেশে থাকেন। ফলে স্ত্রী মালা দে-কে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়। শুক্রবার সকালেই বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় সুবোধবাবুকে। ওই রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মালাদেবীকে রক্ত জোগাড় করতে বলেন। কিন্তু কোথাও রক্ত না পেয়ে ১০০ ডায়ালে ফোন করেন তিনি। পুলিশ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফোন নম্বর দেয় তাঁকে। ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন মালাদেবী। তাদেরই মাধ্যমে গড়িয়া ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট মানসকুমার বাগচী শনিবার দুপুরে বাইপাসের ওই হাসপাতালে গিয়ে সুবোধবাবুর জন্য রক্ত পৌঁছে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন ও বর্তমানের মুষ্টিবদ্ধ হাত পৌঁছে দিচ্ছে ত্রাণ

লালবাজারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সপ্তাহ দুয়েক আগে লন্ডন থেকে চান্দ্রেয়ী সেনগুপ্ত নামে এক মহিলা ১০০ ডায়ালে ফোনে জানিয়েছিলেন, পাইকপাড়ার বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা একা থাকেন। তাঁদের ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই অনুরোধ করেন, যদি কোনও ভাবে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া যায়। আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি।’’ পুলিশের পাশে থাকা উত্তর কলকাতার এমনই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার ডি আশিসের কথায়, ‘‘গত এক মাস ধরে লালবাজার মারফত রোজ গড়ে ১০-১১টা ফোন পাচ্ছি।। দুর্দিনে মানুষের পাশে যতটা থাকা যায় সেই চেষ্টা করছি।’’

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘লকডাউন ঘোষণার পর থেকে খাদ্য, ওষুধ, রক্তের প্রয়োজনে মানুষ বেশি করে ১০০ ডায়ালে ফোন করছেন। আমরা প্রতিটি ফোন গুরুত্ব-সহ শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

আরও পড়ুন : বন্দি-রোষের আগুনে পুড়ে ছাই ‘রেডিয়ো দমদম’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE