অনিন্দিতা ও রজত।
বারাসত আদালতে রবিবার তোলা হয়েছিল মৃত আইনজীবী রজত দে-র স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে-কে। পুলিশের দাবি, তিনি স্বীকার করেছেন নিজের স্বামীকে খুন করার কথা। তবে এ দিন আদালত চত্বরে তাঁকে স্বামীর মৃত্যু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে কথোপকথন এগোল এ ভাবেই।
প্রশ্ন: এই মামলা যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আপনার কী মনে হচ্ছে?
অনিন্দিতা: আমি খুন করিনি।
প্রশ্ন: আপনি খুন করেছেন, এমন তো কেউ বলেননি। কী ভাবে মারা গেলেন আপনার স্বামী?
অনিন্দিতা: সে দিন ও মেলায় গিয়েছিল। যখন বাড়ি ফিরল, তখন বাজে রাত সাড়ে ৮টা। আমি বাড়ি ফিরেছিলাম রাত ১০টা নাগাদ। ওই রাতেই শুতে গিয়ে ওর সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়।
প্রশ্ন: কী নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়েছিল আপনাদের মধ্যে?
অনিন্দিতা: টাকা-পয়সা নিয়েই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। আমি বারাসতের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে। আমার বাবা এবং আমি, দু’জনেই আইনজীবী। রজত নিজে আইনজীবী হয়েও ইদানীং কোনও প্র্যাক্টিস করছিল না। সন্তানের জন্মের পর থেকে এ নিয়ে খুবই অশান্তি হচ্ছিল আমাদের মধ্যে। আমাকেও প্র্যাক্টিস করতে দিত না আমার স্বামী। আমারই বাবার দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকত, আবার আমার উপরেই অত্যাচার চালাত। সেই রাতে শুতে গিয়ে এই সব নিয়েই আবার অশান্তি শুরু হয় আমাদের মধ্যে। তার পরেই ও ওই ঘরে গিয়ে আত্মহত্যা করে। কিন্তু তৃতীয় কোনও ব্যক্তি উপস্থিত ছিল না। আমি খুন করিনি। সে দিন আর কেউ-ই ছিল না ওখানে।
আরও পড়ুন: পুলিশি হেফাজতেই অনিন্দিতা, খুনের কথা স্বীকার, দাবি পুলিশের
কিন্তু তদন্তকারীরা অন্য কথাই বলছেন। তৃতীয় কোনও ব্যক্তি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আছেন, সে কথা মাথায় রেখেই তদন্তে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
এই কথোপকথনের বিষয়ে শোনার পরে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ‘‘প্রথম থেকেই তদন্তে অসহযোগিতা করে চলেছেন অনিন্দিতা। কিছু মিথ্যাও বলেছেন।’’ সেই কর্তার কথায়, ‘‘তদন্তে জানা গিয়েছে, রজতের মানসিক কিছু সমস্যা ছিল। অনিন্দিতার উপরে শারীরিক অত্যাচার করতেন। অনিন্দিতার সারা শরীরে তার চিহ্নও রয়েছে। ফলে এই সম্পর্ক থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছিলেন অনিন্দিতা। বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য কিছুটা এগিয়েছিলেন তিনি।’’
তদন্তকারীদের আরও দাবি, রজত ও অনিন্দিতা মিলে একটি সংস্থা তৈরি করেছিলেন। সেখান থেকে সম্প্রতি বেশ কিছু টাকা লেনদেন হয়। সেই সূত্রেই একটি ব্যাঙ্কের এক ম্যানেজারের সঙ্গে আলাপ হয় অনিন্দিতার। এ বার তাঁকেও জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তৃতীয় ব্যক্তিটি কে, তা জানতেই চলছে খোঁজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy