অনিন্দিতা বার বার বয়ান বদল করায় ধন্দে পড়েন তদন্তকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।
এক সপ্তাহ ধরে নাকানিচোবানি খাওয়ার পর, অবশেষে রজত দে-কে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার সকাল থেকেই নিউ টাউন থানায় ডেকে দফায় দফায় জেরা শুরু হয় অনিন্দিতাকে। পুলিশ সূত্রে খবর, বার বার বয়ান বদলানো অনিন্দিতা শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়েন। এবং নিজের হাতে স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানাচ্ছে, রজতের গলায় শাল জড়িয়ে তার উপর মোবাইল চার্জারের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছিল। জেরায় এমনই স্বীকার করেছেন অনিন্দিতা।
তবে যে ভাবে এই খুন করা হয়েছে, এবং রজতের শরীরে যে সব ক্ষতচিহ্ন মিলেছে, তাতে এই ঘটনায় আরও কেউ বা কেউ কেউ জড়িত বলে দৃঢ় সন্দেহ পুলিশের। অনিন্দিতার একার পক্ষে এ ভাবে খুন করা সম্ভব নয় বলেই ধারণা তদন্তকারীদের। কিন্তু সে বিষয়ে এখনও কিছু স্বীকার করানো যায়নি অনিন্দিতাকে। তা ছাড়া, গলায় খুনের চিহ্ন আড়াল করতে যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছিল, তাতে অপরাধ বিজ্ঞানে পাকা মাথার কেউ থাকতেই পারে বলে পুলিশের সন্দেহ।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
পুলিশ জানিয়েছে, রজত দে-কে খুনের পর নিজের মোবাইলের চ্যাট ডিলিট করে দেন অনিন্দিতা। পুলিশ তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ খতিয়ে দেখছে। খুনের অভিযোগ ছাড়াও তথ্যপ্রমাণ লোপাট, ষড়যন্ত্র-সহ বিভিন্ন ধারায় অনিন্দিতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কথার ফাঁকেই মাদক মেশানো খাবার খাওয়ানো হত তরুণীদের
আরও পড়ুন: হোমে যৌন নির্যাতন ৪ প্রতিবন্ধী কিশোরীকে, গ্রেফতার ৩
পুলিশের অনুমান, দাম্পত্য কলহের জেরেই রজত দে-কে খুন করা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
গত ২৪ নভেম্বর, শনিবার, নিউ টাউনের বিডি ব্লকের ফ্ল্যাট থেকে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ৩৪ বছরের রজত দে-র দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পর সাত দিনে বার বার নিজের বয়ান বদলেছেন অনিন্দিতা। প্রথমে দাবি করেন— ঘটনার রাতে স্বামীর সঙ্গে নয়, তিনি অন্য ঘরে শুয়েছিলেন। পাওয়ার অফ হয়ে যাওয়ায় ঘুম ভেঙে যায়। এর পর পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন মেঝেতে বসে রয়েছেন রজত। গায়ে হাত দিতেই তিনি পড়ে যান। ভয় পেয়ে তখন প্রতিবেশীর বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন অনিন্দিতা। গত শুক্রবার বয়ান বদলে অনিন্দিতা দাবি করেন, গলায় চাদর জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন রজত। প্রমাণ হিসাবে ওই দিন তিনি একটি চাদরও পুলিশকে দেন।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বসে ইউরোপ আমেরিকায় প্রতারণা, কোটিপতি ‘চারমূর্তি’ গ্রেফতার
অনিন্দিতা বার বার বয়ান বদল করায় ধন্দে পড়েন তদন্তকারীরা। রজত দে মৃত্যুরহস্যের রহস্যের কিনারা করতে আসরে নামতে হয় বিধাননগরের খোদ পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহকে। শনিবার সকাল থেকে তাঁকে থানায় ডেকে জেরা করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত জেরার মাঝেই ভেঙে পড়েন অনিন্দিতা।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy