n ফেরেনি হুঁশ: দূরত্ব-িবধি উড়িয়ে বারাসতে ভিড় মুদির দোকানে। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা। বারাসতের হেলাবটতলা বাজারের একটি দোকান থেকে ডিম কিনছিলেন এক ব্যক্তি। মুখে মাস্ক। তাঁকে দেখেই হইহই করে ছুটে গেলেন আশপাশের লোকজন। কেউ আবার মোবাইল বার করে ফোন করতে লাগলেন পুলিশকে। লকডাউন শুরু হবে দুপুর ১টা থেকে। ভদ্রলোকের মুখে তো মাস্কও রয়েছে। তা হলে সমস্যা কোথায়? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই ব্যক্তির ছেলে করোনা পজ়িটিভ। ছেলে বাড়িতেই রয়েছেন। তাই পরিবারের সকলকেই বলা হয়েছে বাড়িতে থাকতে। কিন্তু সেই নির্দেশ উড়িয়েই এ দিন পথে বেরিয়ে পড়েন রোগীর বাবা।
কেন?
তাঁর দাবি, ‘‘আমি রিপোর্ট আনতে গিয়েছিলাম।’’ তা হলে ডিমের দোকানে কেন? এ বার জবাব এল, ‘‘ফেরার পথে ডিম নিচ্ছিলাম।’’
শহর ও শহরতলিতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অবস্থা এমনই যে, বহু হাসপাতালেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ঘরে থেকেই চিকিৎসার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অভিযোগ, কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের পরিজনেরা নানা অছিলায় প্রায়ই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন। বাজার বা দোকানেও যাচ্ছেন তাঁরা। এ দিন বারাসতের ছোট বাজারের এক দোকানি বললেন, ‘‘আমাদের পক্ষে কি জানা সম্ভব, কার বাড়ির লোকের করোনা হয়েছে আর কার হয়নি! ওঁদের কোনও দায়িত্ববোধ নেই?’’
বারাসত পুরসভা সূত্রে খবর, যাঁরা করোনা পজ়িটিভ, তাঁদের পরিজনেদেরও বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় সব জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু মানুষ দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছেন। এ দিন বারাসত পুরসভার প্রশাসক অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বারবার অভিযোগ আসছে। আমরা লোকজনকে সতর্কও করছি। তা-ও যদি তাঁরা নির্দেশ না মানেন, তা হলে তাঁদের সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, মধ্যমগ্রামে প্রথম দিকে লকডাউন না মানায় বেশ কয়েক জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এ বার তাই লকডাউনে আগের থেকেও বেশি কড়াকড়ি করা হচ্ছে ওই এলাকায়। তা সত্ত্বেও মধ্যমগ্রামের বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় এ দিন মাস্ক ছাড়া দেখা গিয়েছে কয়েক জনকে। কাউকে কাউকে আবার ব্যারিকেড টপকে পারাপার করতেও দেখা যায়।
এ দিন বারাসত ও মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের টহলদারি চলেছে। দূরত্ব-বিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পথে নেমেছিলেন বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আক্রান্ত রোগীদের পরিবারকে বারবার করে বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে। কারও কোনও অসুবিধা হলে হেল্পলাইনে ফোন করতেও বলা হয়েছে। এ সব না মানলে, মাস্ক না পরলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জ়োন নতুন আরও ন’টি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy