Advertisement
E-Paper

হাওড়ার গ্রামে অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ফসল বিমার টাকাই, জানা গেল তদন্তে

সোমবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি, ২০১৭ সালে ওই দু’টি পঞ্চায়েতে বন্যায় সময়ে খরিফ ফসলের যে ক্ষতি হয়েছিল এটা তারই ক্ষতিপূরণ।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

ফসল বিমার টাকাই ঢুকেছে জয়পুরের বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্টে— তদন্তে এমনই জানাল প্রশাসন। আর তা নিয়ে আর এক দফা চাপান উতোর শুরু হয়েছে। টাকা প্রাপকদের অনেকেই যে চাষি নন, এমনই অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান গ্রামে। দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে জেলা কৃষি দফতর এবং সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থার মধ্যে।

সোমবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি, ২০১৭ সালে ওই দু’টি পঞ্চায়েতে বন্যায় সময়ে খরিফ ফসলের যে ক্ষতি হয়েছিল এটা তারই ক্ষতিপূরণ। যে সংস্থার কাছে চাষিরা বিমা করিয়েছিলেন তারাই দু’দিন ধরে সরাসরি চাষিদের অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাঠিয়েছে। ফলে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।’’

গত শুক্র ও শনিবার হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেশ কয়েকজন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে। অভিযোগ, ওই সব গ্রাহকের অনেকেই বুঝতে পারেননি কোথা থেকে এল ওই টাকা।

আরও পড়ুন: ছ’দিন পরে গঙ্গা থেকে দেহ মিলল যুগলের

জেলা প্রশাসনের দাবি, চাষের সময় চাষিরা ফসল বিমা করিয়ে রাখেন। সেই বিমার প্রিমিয়াম দেয় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার যৌথ ভাবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসলের ক্ষতি হলে বিমা সংস্থা চাষিদের ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেয়। প্রতি বছরই রাজ্য সরকার ফসল বিমা করানোর জন্য সংস্থা বাছাই করে। ২০১৭ সালে একটি কেন্দ্রীয় সরকারি বিমা সংস্থাকে দায়িত্ব দেয় রাজ্য সরকার। ওই সংস্থার পক্ষ থেকেও সোমবার জানানো হয় ২০১৭ সালে বন্যায় ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতে বহু ধান নষ্ট হয়েছিল। যে সব চাষি ফসল বিমা করিয়ে রেখেছিলেন তাঁদেরই ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থার দাবি, প্রায় ৭০০ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে মোট ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। সরাসরি চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকেছে। জেলার আরও পাঁচটি পঞ্চায়েতে এই টাকা দেওয়া হবে বলে ওই বিমা সংস্থা সূত্রের খবর।

তবে যাঁরা এই টাকা পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই প্রশাসনের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এমন অনেকের অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকেছে, যাঁদের জমি নেই। অনেক ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকেছে। ঘোড়াবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা হারুণ রশিদ বলেন, ‘‘কাদের নামের তালিকা গিয়েছিল চাষি হিসাবে? জমিই নেই অথচ তাঁর নামে হাজার হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঢুকে গেল এটা তো তদন্ত করে দেখা দরকার।’’

ওই বিমা সংস্থার এক কর্তা জানান, চাষিদের নাম, কতটা জমি তিনি চাষ করেছেন, জমির দাগ নম্বর যাচাই করে চাষির নামের তালিকা কৃষি দফতরই পাঠায় বিমা সংস্থার কাছে। সেই তালিকা দেখেই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়। হাওড়া জেলা কৃষি দফতর আবার জানিয়েছে, বিমাকারী সংস্থাই চাষিদের নামের তালিকা বানিয়ে তা কৃষি দফতরের কাছে জমা দেয়।

আরও পড়ুন: বিয়ের প্রস্তাব প্রতাখ্যাত হওয়ায় নিজের পুরুষাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কাটল যুবক

তবে টাকা প্রাপকদের তালিকায় যে গরমিল রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন কৃষি আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের সাফাই, খুব তাড়াতাড়ি এই তালিকা তৈরি করতে গিয়ে প্রকৃত চাষিদের নাম যাচাই করা হয়নি।

চাষিদের অভিযোগ, এই গরমিল করা হয়েছে ইচ্ছে করেই। এতে বহু প্রকৃত চাষির নাম বাদ পড়েছে। ঘটনার তদন্ত হলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়বে বলে তাঁদের অনেকের দাবি।

আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘টাকা দেওয়ার আগে বিমা সংস্থা পঞ্চায়েত সমিতিতে আলোচনা করতে পারত। আচমকা কিছু গ্রাহকদের অ্যকাউন্টে টাকা ঢুকে পড়ায় বিভ্রান্তি ছড়ায়।’’

Insurance Bank Account Corp Insurance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy