Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Midnapore

ভর্তি হতেই ১০ দিন, রিপোর্ট পজ়িটিভের পরেও গড়িমসির নালিশ

বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরেও কেন ১০ দিন দেরি করা হল, কেনই বা সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার আগে যুবককে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল না—প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

উপসর্গ দেখা দেওয়ায় কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন নিজেই। রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। তারপরেও করোনা সংক্রমিত সেই যুবকের হাসপাতালে ভর্তি হতে সময় লাগল পাক্কা ১০ দিন।

ঘটনাক্রম বলছে, বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করানোর জন্যই পাঁশকুড়ার ওই যুবককে বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করাতে দেরি হয়েছে। করোনা আক্রান্ত ওই যুবক স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধও। এ ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব ঘটে থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলও।

পাঁশকুড়ার পুরুষোত্তমপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ওই এক যুবক কলকাতায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তিনি গত ১৫ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করান। ১৭ তারিখ পাঁশকুড়ায় ফিরে বাড়িতে না উঠে সামনে সরকারি স্কুলে নিভৃতবাসে থাকতে শুরু করেন। যুবকের কাশি, গলা ব্যথা ও দুর্বলতার মতো উপসর্গ ছিল। ১৭ তারিখই কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, তিনি কোভিড পজ়িটিভ। এক পরিচিতের মাধ্যমে সেই রিপোর্ট হাতেও পেয়ে যান যুবক। তারপর শুরু হয় হাসপাতালে
ভর্তির চেষ্টা।

গোড়ায় স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও আশাকর্মীর কাছে করোনা রিপোর্ট পৌঁছে হাসপাতালে ভর্তির আর্জি জানান যুবক। অভিযোগ, তাঁকে ভর্তির কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। আশাকর্মী শুধু ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও কিছু প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দিয়ে যান। ক্রমশ যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফের হাসপাতালে ভর্তির আবেদন করলে, জানানো হয়— সরকারি হাসপাতালে তাঁর করোনা পরীক্ষা হবে। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলেই হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হবে। ২১ জুলাই পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটিতে ওই যুবকের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। ২৬ জুলাই ফের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। অবশেষে ২৭ জুলাই, সোমবার সন্ধ্যায় ওই যুবককে মেচগ্রামে বড়মা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরেও কেন ১০ দিন দেরি করা হল, কেনই বা সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার আগে যুবককে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল না—প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয় আশাকর্মী ঝর্না ঘড়া মাইতির দাবি, ‘‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তাঁরা জানান, বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্ট দেখিয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না। তাই ওই যুবকের নতুন করে করোনা পরীক্ষা করা হয়।’’ বড়মায় চিকিৎসাধীন ওই যুবক ফোনে বলেন, ‘‘আমি করোনা পজ়িটিভ বলা সত্ত্বেও কেউ হাসপাতালে ভর্তি করতে এগিয়ে আসেনি। খুবই আতঙ্কে ছিলাম। ওষুধ না পেয়ে শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। শেষে একদিন খুব রেগে আশাকর্মীকে বললে নতুন করে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে।’’

কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরি থেকে করোনা পরীক্ষা করালে কি সত্যি সরকারি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যায় না?

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্রের জবাব, ‘‘আইসিএমআরের অনুমোদন ছাড়া কোনও ল্যাবরেটরিতে কোভিড পরীক্ষা হয় না। তাই রিপোর্ট বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে এলেও পরীক্ষা করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। কোথাও সমন্বয়য়ের অভাব ঘটে থাকতে পারে। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Midnapore CoronaVirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE