ফাইল চিত্র।
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’-র ভাবনার বীজ বপন হয়েছিল এই মন্দির থেকেই। গত ২০১১ সাল থেকে সেই মন্দির পড়ে রয়েছে মূর্তিহীন অবস্থায়। সর্বত্র যেখানে কালীর আরাধনা চলছে, তখন শনিবার ‘মূর্তিহীন’ অবস্থাতেই পুজো হল কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের দরিয়াপুরের কপালকুণ্ডলা মন্দিরে।
২০১১ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কপালকুণ্ডলা মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছিল। তখন মন্দিরের ভেতর থাকা কালীর মূর্তি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর মন্দির সংস্কার শেষ হলেও, কালীর মূর্তি আর ফিরে আসেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। লোকশ্রুতি, আজ থেকে ১০০ বছর আগে কপালকুণ্ডলা নামে এক নারীর হাত কেটে বলি দিচ্ছিল এক কাপালিক। সে সময় তাঁকে উদ্ধার করেন এক যুবক। তারপর থেকেই কপালকুণ্ডলা মন্দিরে কালীপুজোর প্রচলন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে মন্দির সংস্কারের কাজ শেষ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। একেবারে নতুন রূপে সেজে ওঠে কপালকুণ্ডলা মন্দির। কিন্তু, মন্দিরের ভেতরে কালী মূর্তি বসানো হয়নি। পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই মন্দিরের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়তে থাকে। দেওয়ালের প্লাস্টারও খসে পড়ে। গোটা মন্দির সংস্কারের পরও অনেক ফাঁকফোঁকর রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। নবকুমার জানা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘গোটা মন্দির ভেঙে গিয়েছে। মন্দির মূর্তিহীন। অথচ এই মন্দির দেখতে প্রতিদিন নানা প্রান্ত থেকে লোকেরা আসেন।’’ মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভবেশচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। বহু পর্যটক নিয়মিত মন্দির দেখতে আসেন। মন্দিরের দরজা খুলে দিই। তবে মূর্তিহীন অবস্থা দেখে তাঁরা ফিরে যান।’’ শনিবার কালীপুজোর দিনও মূর্তিহীন অবস্থায় ছিল কপালকুণ্ডলা মন্দির। যা নিয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। যদিও বিষয়টি জানার পর কাঁথি দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানা বলেন, ‘‘কপালকুণ্ডলা মন্দির এবং সংলগ্ন শিবালয় মন্দির সংস্কার রয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে। তবে সেখানে কালীর মূর্তি বসানোর দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। তাই দ্রুত ওই মন্দিরে কালী মূর্তি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy