—ফাইল চিত্র
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার এক দশক পরেও শিলিগুড়িতে কেন জেতা যায় না, তা নেতানেত্রীদের কাছে জানতে চাইলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন অভিষেক। তাঁর সঙ্গে প্রশান্ত কিশোর বা পিকের আসার কথা থাকলেও কলকাতার কিছু কাজে আটকে পড়ায় তিনি আসেননি। সন্ধ্যায় উত্তরকন্যার কন্যাশ্রী বাংলোয় শিলিগুড়ির শহর এবং গ্রামের নেতাদের নিয়ে দু’টি বৈঠক করেন অভিষেক। সেখানেই এই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
দলীয় সূত্রের খবর, ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের অভাবে বরাবর শিলিগুড়ি হাতছাড়া থাকছে বলে বৈঠকে নেতানেত্রীদের একাংশ অভিষেককে জানান। বৈঠকে মন্ত্রী গৌতম দেব, সমতলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার ছাড়াও শহর এবং গ্রামের একাংশ নেতা উপস্থিত ছিলেন। সব শোনার পর অভিষেক আসন্ন বিধানসভায় একজোট হয়ে লড়াই করতে সবাইকে অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে বুথস্তর থেকে সংগঠন এখনও নতুন করে সক্রিয় করে তোলার জন্যও বলেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা দার্জিলিং জেলা কমিটির ঘোষণা করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। সরকারের প্রকল্প নিয়ে বেশি প্রচারের কথা বলেছেন। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘পুরোটাই আমাদের দলের আভ্যন্তরীণ বৈঠক। সবাইকে একজোট করে লড়াই করা নিয়ে কথা হয়েছে।’’
গত ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ায় একমাত্র শিলিগুড়ি বিধানসভায় জিতেছিলেন তৃণমূলের রুদ্রনাথ ভট্টচার্য। তার পরে বিধানসভা, লোকসভা, পুরসভা থেকে মহকুমা পরিষদ— কোনও ভোটেই তৃণমূল জিততে পারেনি। এক দফায় শিলিগুড়ি বিধানসভায় প্রার্থী হয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়া। সিপিমের অশোক ভট্টাচার্যের কাছে হারের পর তিনি একাধিক শহরের নেতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। একজোট হয়ে লড়াই না করা, নিজের ভোট ছাড়াও অন্য কোনও ভোটে ঘাম ঝরিয়ে লড়াই না করার মতো রিপোর্ট দল ছাড়ার আগে কলকাতায় পাঠিয়েলেন ভাইচুং। তার পরেও অবশ্য পরিস্থিতি বদল হয়নি বলে অভিযোগ। তবে অভিষেকের বৈঠক ঘিরে দলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ একাংশ নেতারা জানান, তৃণমূলের প্রথম দিন থেকে দল করার অনেক নেতানেত্রীকে বৈঠকে না ডেকে এমন কিছু নেতাকে ডাকা হয়েছে, যাঁদের নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর মধ্যে শো-কজ় হওয়া, দাদার অনুগামী বলে পরিচিত, দল না করার কথা বলা নেতাও আছেন। সেখানে গত জেলা কমিটির পদে থাকাদের অনেককেই ডাকা হয়নি। ওই নেতাদের কথায়, ‘‘কলকাতার নেতারাই দল চালাচ্ছেন। আগামীতে অনেকেই দল করবেন কি না সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।’’
তৃণমূলের অন্দরের খবর, রাতে কার্যত চুপচাপ তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা আইএনটিইউসি-র উত্তরবঙ্গের অন্যতম নেতা অলোক চক্রবর্তী। অলোকবাবু একসময় তৃণমূলে ছিলেন। আবার তিনি দল ছাড়বেন বলে এদিনের বৈঠকের পর চাউর হয়েছে। যদিও অলোকবাবু কিছুই বলেননি। ফোনও বন্ধ করে রেখেছিলেন। দলীয় সংগঠনে পর্যালোচনা, ভাঙন ঠেকানো, দলবদল নিয়েই অভিষেকের সফর৷ আজ, দুপুরে চালসায় জলপাইগুড়ির নেতাদের নিয়ে বসবেন অভিষেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy