এই নিয়ে টানা পাঁচ বার দেশের মধ্যে পরিচ্ছন্নতম শহরের শিরোপা জিতল মধ্যপ্রদেশের ইনদওর শহর, সঙ্গে ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ’ পুরস্কার। পরিচ্ছন্নতার নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে ছত্তীসগঢ়, আর তালিকায় সবার শেষে ২৩তম স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। এটা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসাবে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক ২০১৬ সাল থেকে দেশের ছোট ও বড় শহরগুলিতে পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি ও নিকাশিব্যবস্থার উপর সমীক্ষা শুরু করেছে। পরিচ্ছন্নতার ক্রমতালিকায় এ বছর সবার শেষে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান রাজনৈতিক অভিসন্ধিজাত কি না, বলা দুষ্কর। তবে আমার বিশ্বাস, কোনও শহর বা রাজ্যের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার প্রাথমিক দায় সরকারের হলেও নাগরিকদের সচেতনতা এবং সদিচ্ছা ছাড়া তা কখনও পুরোপুরি সম্ভব হতে পারে না। এই বিশ্বাসের পিছনে রয়েছে দুটো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে এক বার ইনদওর গিয়ে দিনদশেক থাকতে হয়েছিল। সেই সময়ই শহরটাকে দেখে মনে হয়েছিল, ভারতবর্ষের মধ্যে সে যেন এক অন্য ভারতবর্ষ। রেলস্টেশন থেকে শুরু করে ব্যস্ত বাজার কিংবা রাস্তাঘাট একেবারে ঝকঝকে, আবর্জনামুক্ত। আমাকে মুগ্ধ করেছিল নাগরিকদের সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা বোধ এবং কর্তব্যপরায়ণতা। আমার অবস্থানকালে কোনও বাড়ি, দোকান কিংবা রেস্তরাঁ থেকে কাউকে রাস্তায় বা নর্দমায় আবর্জনা ছুড়তে দেখিনি। গৃহস্থালি থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সমস্ত আবর্জনা অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে তাঁরা নির্দিষ্ট পাত্রে ফেলছেন এবং পুরসংস্থার পক্ষ থেকে সেগুলোকে নিয়মিত সংগ্রহ করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় অভিজ্ঞতাটি অতি সাম্প্রতিক এবং সেটি এ রাজ্যেরই এক গ্রামীণ আবর্জনা ব্যবস্থাপনার। বর্ধমান জেলার মেমারি ২ ব্লকের বোহার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সোঁতলা গ্রামে একটা কঠিন ও তরল বর্জ্য নিরাপদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। রাজ্যের পরিবেশ দফতরের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। অবশ্য শুরু থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। বস্তুত বোহার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান উপপ্রধানের নেতৃত্বে এই প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি হয়। কর্মীদের প্রশিক্ষণ-সহ প্রকল্পের খুঁটিনাটি তদারকিতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।