সীমা অতিক্রান্ত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীর স্বার্থ ভুলে রাজনৈতিক স্বার্থে অনাচার চালিয়ে যাওয়া, নৈরাজ্যের উপসর্গগুলোকে নিরন্তর প্রশ্রয় দিয়ে যাওয়া— এই প্রক্রিয়াতেই রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে বিষবৃক্ষ রোপনের কাজটা সুচারু ভাবে চলছিল দশকের পর দশক ধরে। সে বৃক্ষ আজ মহীরূহে রূপান্তরিত। ফলও ফলতে শুরু করেছে গাছে। অন্যায্য, অন্যায়, অনৈতিক দাবিতে রাজ্যের একের পর এক কলেজ বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ছে বিক্ষোভ, সঙ্ঘাত, সঙ্ঘর্ষ, ভাঙচুর, অচলাবস্থা— নৈরাজ্যের পূর্ণগ্রাস এগিয়ে আসছে যেন!
কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অরাজক পরিস্থিতি কিছু দিন অন্তরই মাথাচাড়া দিচ্ছে সম্প্রতি। এক এক সময়ে এক এক রকম কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে প্রতিষ্ঠানগুলো। আপাতত যে অরাজকতাটা দেখা যাচ্ছে, তার কারণ হল শয়ে শয়ে পড়ুয়ার পরীক্ষায় বসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ন্যূনতম ৬০ শতাংশ হাজিরা না থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না পড়ুয়ারা— এমনই বিধি বলবৎ রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিধিকে অযৌক্তিক বা অন্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা কোনও বিবেচক ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব নয় সম্ভবত। কিন্তু বিধিতে আটকে যাওয়া পড়ুয়ারা এখন কিছুতেই বিধান মানতে রাজি নন। হাজিরা খাতা বলছে, প্রয়োজনীয় মাত্রায় উপস্থিতি ছিল না। কিন্তু পড়ুয়ারা বলছেন, পরীক্ষায় বসতে দিতেই হবে।
সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ, বেহালা কলেজ, হেরম্বচন্দ্র কলেজ— অরাজক পরিস্থিতি সংক্রামিত হচ্ছে একের পর এক কলেজে। খোদ শিক্ষামন্ত্রীকে কোথাও কোথাও ছুটে যেতে হচ্ছে পরিস্থিতি সামলাতে। প্রয়োজনীয় মাত্রায় হাজিরা যাঁদের নেই,তাঁদের কিছুতেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েও দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু পরিস্থিতি বিন্দুমাত্র বদলাচ্ছে না। নতুন করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে নতুন নতুন কলেজে। শিক্ষাঙ্গনের অরাজকতা ব্যস্ত রাজপথে আছড়ে পড়ছে। সাধারণ জনজীবন সচকিত হয়ে পড়ছে।