Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: নাগরিক অধিকার

পাড়ার দোকানে বিল তো দেয়ই না, উল্টে বলে অন্য জায়গা থেকে জিনিস কিনে নিন। কিছু দিন আগে এক নামী কোম্পানির গুঁড়ো দুধ কিনে দেখি, সেটা খারাপ।

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০৬:৩৯
Share
Save

ছেঁড়া নোট থেকে শুরু করে কেনাকাটার সমস্যা নিয়ে এখন টিভি বা রেডিয়োয় হামেশাই মানুষকে সচেতন করা হয় নানা রকম অনুষ্ঠান বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে সব ক্ষেত্রের আধিকারিকরা আসেন, বলেনও খুব সুন্দর করে। কিন্তু আসল সময়ে কাজের কাজ কিছু হয় কি? যেমন, বিজ্ঞাপন দেখে ছেঁড়া নোট নিয়ে ব্যাঙ্কে গেলে উত্তর মেলে, ‘হবে না। আমি কি দিয়েছি?’ যদি বলা হয়, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক তো বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তখন জানিয়ে দেওয়া হয় ব্যাঙ্কের গ্রাহক ছাড়া নোট বদল করা যাবে না। যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই একই চিত্র। মানছি, ব্যাঙ্কের গ্রাহক ছাড়া নোট বদলে দেওয়া বাস্তবে হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু যেখানে বাজার ছেঁড়া নোটে ছেয়ে গিয়েছে এবং নিত্যদিন সমস্যায় পড়ছেন জনগণ, সেখানেও কি এই নিয়মকে কিছুটা শিথিল করা চলে না, অন্তত প্রবীণদের স্বার্থে?

এ বার আসি বিল নেওয়ার প্রসঙ্গে। পাড়ার দোকানে বিল তো দেয়ই না, উল্টে বলে অন্য জায়গা থেকে জিনিস কিনে নিন। কিছু দিন আগে এক নামী কোম্পানির গুঁড়ো দুধ কিনে দেখি, সেটা খারাপ। দোকানে সেটা দেখাতে দোকানদার কাস্টমার কেয়ারে ফোন করতে বললেন। তাঁরাও ‘দেখছি’ বলেই কাজ শেষ করলেন। যখন বুদ্ধি করে দোকানদারকে বললাম, প্যাকেটটা পরীক্ষা করতে দিচ্ছি, তখন উনি আমায় তিন-চার দিন পরে আসতে বললেন। অবশেষে, একটা নতুন প্যাকেট পেলাম।

প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন, এত আইনি বিজ্ঞাপন দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা লাভবান হচ্ছে। আমাদের উপকার হচ্ছে কি? বাড়িতে যাঁরা কাজে সাহায্য করেন তাঁদের কাছেই শুনেছি, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ মেলে না সব সময়। একটা সস্তার ওষুধ দিয়ে বাকিটা বাইরে থেকে কিনতে বলা হয়। তা ছাড়া, ওই ওষুধ নিতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হয়। এই সব ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্তাদের একটাই উত্তর, ‘দেখছি’। সাধারণ মানুষেরা কার কাছে যাবেন অভিযোগ জানাতে? কার এত সময় আছে? আরও কত দিন ধরে এ ভাবে আমরা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হব?

মলিনা সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৫৬

বইয়ের আগ্রহ

সম্প্রতি বইমেলার সময় অনেকেই চর্চা করলেন, বই বিক্রি যদিও বিশেষ কমেনি, তা হলে গ্রন্থাগারগুলোর এমন হাল কেন? বেশির ভাগ পাবলিক লাইব্রেরিই পাঠকের অভাবে ধুঁকছে। বহু ছোট, মাঝারি গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে গেছে। এটা সত্যিই এক রহস্য। মানুষ বই কিনছেন, তার মানে বই পড়ছেন। কিন্তু গ্রন্থাগারে গিয়ে বই পড়ছেন না। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে দেখা যাবে, গ্রন্থাগারে প্রধানত যান বয়স্ক পাঠক-পাঠিকারা। কমবয়সি ছেলেমেয়েরা আজকাল লাইব্রেরিমুখো হচ্ছেন অনেক কম। স্বাভাবিক ভাবেই এর প্রধান কারণ সময়ের অভাব। তা ছাড়া, প্রযুক্তির অবাধ সুযোগে বাড়িতে বসেই বই পড়ে ফেলা যায়। এই প্রজন্মকে গ্রন্থাগারের প্রতি আকৃষ্ট করতে গেলে, সেগুলোকেও ঢেলে সাজাতে হবে। প্রথমত, বইয়ের একটা কম্পিউটারাইজ়ড ক্যাটালগ রাখতে হবে, যাতে সহজেই ঈপ্সিত বইটি খুঁজে নেওয়া যায়। অধিকাংশ জায়গায় এখনও সেই কার্ডে লেখা বইয়ের তালিকা মেলে। সেখান থেকে বই খুঁজে বার করা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। দ্বিতীয়ত, গ্রন্থাগারে নতুন প্রজন্মের উপযোগী বিভিন্ন বিষয়ের বই, পত্রিকা রাখা। এতে সাহিত্যের বই ছাড়াও কারিগরি শিক্ষা ও অন্যান্য ব্যবহারিক শিক্ষার উপর বই থাকবে। এই ধরনের বইয়ের জন্য একটু আলাদা জায়গা থাকলে ভাল।

সম্প্রতি ফিনল্যান্ড সফরে গিয়ে ওখানকার একটি লাইব্রেরি দেখার সুযোগ হল। এটি তৈরি হয়েছে খুব বেশি দিন নয়। তৈরির আগে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অল্পবয়সিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁরা কী ধরনের লাইব্রেরি চান। কেউ লিখলেন, ওখানে যেন ছোটদের একটা আলাদা বইয়ের জগৎ থাকে, যেখানে প্রচুর খেলনা, খেলার জায়গা থাকবে। কেউ জানালেন, কফি, স্ন্যাকসের স্টল থাকবে। কেউ বললেন, কম্পিউটারে বিভিন্ন জিনিস শেখানোর ব্যবস্থা থাকবে ইত্যাদি। ফলে, দেখা গেল নতুন লাইব্রেরিতে তরুণ প্রজন্মের ভিড়। কেউ কম্পিউটারে নানা নতুন বিষয় শিখছেন। কেউ ফোটোগ্রাফি বা গান-বাজনা নিয়ে পড়াশোনা করছেন। আর ছোটদের বিভাগ দেখে তো চোখ জুড়িয়ে গেল। তারা ইচ্ছেমতো ছোটাছুটি, লাফালাফি করছে। ছবির বই দেখছে। তাদের মায়েরাও কিছু একটা নিয়ে বসে গেছেন। জানি, এত সব কিছু আমাদের এখানে সম্ভব নয়। তবু স্থানীয় মানুষ, প্রশাসন উদ্যোগী হলে অনেক কিছুই করা যায়। যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল, শিশু-বয়স থেকে ভাল বইয়ের প্রতি আগ্রহ গড়ে তোলা। বাবা-মায়েরা যদি নিজেরা ভাল বই পড়েন, তা হলে শিশুও আগ্রহী হবে বই পড়তে।

শিবপ্রসাদ রায় চৌধুরী, শিবপুর, হাওড়া

রক্ষী-হীন

সাম্প্রতিক কালে সংবাদপত্র খুললেই কোথাও না কোথাও এটিএম ভেঙে টাকা লুট ও ভাঙচুরের ঘটনা চোখে পড়বে। সম্প্রতি হাওড়ার সাঁকরাইলের আলমপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম ভেঙে টাকা লুট করার কয়েক দিন পর হুগলির চাঁপদানির তিন নম্বর ওয়র্ডে জিটি রোড সংলগ্ন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক লাগোয়া এটিএম ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা হয়। এই এটিএম দুটোতে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী ছিল না।

শুধু এই দু’টি এটিএম নয়, হাওড়া জেলা জুড়ে অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি এটিএম কাউন্টারগুলোয় নিরাপত্তা রক্ষী নেই। এই সুযোগটাই দুষ্কৃতীরা কাজে লাগাচ্ছে। কোনও এটিএম-ই নিরাপত্তাবিহীন থাকার কথা নয়। বহু এটিএম-এ কর্মরত নিরাপত্তারক্ষীরা মাসের পর মাস মাইনে না পাওয়ায় কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। রক্ষী-বিহীন এটিএমগুলোতে প্রচুর টাকা জমা থাকে। এ বিষয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। এটিএমগুলোতে নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় এটিএম ব্যবহারকারীদের অনেক সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গ্রাহকদের একটা বড় অংশ অনলাইন লেনদেনে অভ্যস্ত হলেও, এখনও অনেকেই এটিএম ব্যবহার করেন। এটিএম কাউন্টারে টাকা সুরক্ষিত রাখা ও প্রতিটি এটিএম-এ নিরাপত্তারক্ষী রাখার জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করছি।

অপূর্বলাল নস্কর, ভান্ডারদহ, হাওড়া

প্রতিষেধক নেই

সীমান্ত শহর বনগাঁ এই মুহূর্তে সমস্যাবহুল। বনগাঁ শহরের একমাত্র হাসপাতালটি এখন সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। কিন্তু এই মুহূর্তে কুকুরে বা বিড়ালে কামড়ালে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধকটুকুও নেই এই হাসপাতালে। অন্যত্র রেফার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে একটি পাগলা কুকুর চাঁপাবেড়িয়া চাকদহ রোড অঞ্চলে ১৭ জনকে কামড়েছে। সকলকেই বেলেঘাটা আইডি ও অন্যত্র রেফার করা হয়েছে।

বনগাঁয় বহু প্রান্তিক মানুষ বসবাস করেন, যাঁদের অধিকাংশেরই নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। বাইরে থেকে চড়া দামে প্রতিষেধক কেনা তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে ন্যূনতম প্রতিষেধক না পাওয়া গেলে তা অত্যন্ত লজ্জার। প্রদীপের নীচের এই অন্ধকার দূর করতে মহকুমা শাসক, পুরপ্রশাসক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শ্যামল বসু, মাঝেরপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা

যানজটের সমস্যা

বালিহল্ট স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় প্রত্যেক দিনের যানজটের সমস্যায় বিরক্ত নিত্যযাত্রীরা। প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। যানজটের সমস্যা দূর করতে নতুন নিবেদিতা সেতুটিকে কোনও ভাবে ব্যবহার করা যায় কি না, প্রশাসন ভেবে দেখুক।

কৃষ্ণেন্দু গুঁই, বরাহনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rights common people

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}