আজ মহাষষ্ঠী। সকলকে শুভেচ্ছা।
শাস্ত্রীয় মতে আজই দেবীর বোধন। বেশ কয়েক বছর আগে এই রকম একটা বোধনের ঠিক আগেই একটা বিসর্জন দেখেছিল বাংলা— শিল্পায়ন সম্ভাবনার বিসর্জন। সিঙ্গুর থেকে বিদায় নিয়েছিল টাটা। বিদায়ের ক্ষণে যাঁর দিকে বন্দুকের নলটা তাক করে ট্রিগার টিপেছিলেন রতন টাটা, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন যিনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সৈনিকদের অন্যতম ছিলেন যিনি, এ বারের বোধনের ঠিক আগেই তাঁর বিসর্জন হয়ে গেল। তিনি মুকুল রায়।
জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা মুকুল রায় ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন দল থেকে। দলের সঙ্গে সম্পর্ক যে ভাল যাচ্ছিল না ইদানীং, মুকুল রায় নিজেও সে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে নেওয়া, বার বার দিল্লি যাতায়াত, বিজেপি ঘনিষ্ঠতা সংক্রান্ত জল্পনা নস্যাৎ করার কোনও চেষ্টাই না করা— মুকুল রায়ের নানা আচরণে স্পষ্ট হচ্ছিল তাঁর বেসুর। চতুর্থী এবং পঞ্চমীতে দলের প্রতি অনীহা আরও স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেন। অবধারিত ভাবে দল তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করে। তবে দলের তরফেও মুকুল রায়ের প্রতি অনীহার ইঙ্গিত দেওয়া শুরু হয়েছিল কিছু দিন আগে থেকেই। দলের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া বা তাঁর উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানানোর মাধ্যমে তৃণমূলও বুঝিয়ে দিচ্ছিল, বিচ্ছেদই কাম্য মুকুল রায়ের সঙ্গে। সেই বিচ্ছেদ হয়েও গেল। কিন্তু এ বার কি? মুকুল রায় কি বিজেপিতে যাচ্ছেন? নাকি আলাদা দল গড়ছেন? যদি আলাদা দল গড়েন, তা হলে সে দল কি জোট বাঁধবে বিজেপির সঙ্গে? এমন হরেক প্রশ্ন এ বার উঁকি দিতে শুরু করেছে রাজনীতির উঠোনের চারপাশ থেকে।