Advertisement
E-Paper

মেধাতালিকার প্রথম দশে দু’টি স্কুল থেকে ৫৫ জন! কোন মন্ত্রে এমন সাফল্য উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম পর্বে?

হিসাব বলছে মোট ৫৫ জন পড়ুয়াই পুরুলিয়া বা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। একটি বা দু’টি স্কুলের এত সংখ্যক পড়ুয়া এ ভাবে মেধাতালিকা দখল করে থাকার ঘটনা খুব একটা দেখা না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, অন্য স্কুলগুলি কেন পিছিয়ে গেল?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৭
উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় সেমেস্টারের ফলাফল প্রকাশ শিক্ষা সংসদের।

উচ্চ মাধ্যমিকে তৃতীয় সেমেস্টারের ফলাফল প্রকাশ শিক্ষা সংসদের। নিজস্ব চিত্র।

এ বছর শুরু হয়েছে সেমেস্টার পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথম পর্বের ফল চমকে দিয়েছে গোটা রাজ্যকে। মেধাতালিকার প্রথম দশে জায়গা পেয়েছে ৬৯ জন পড়ুয়া। তার সিংহ ভাগ জুড়েই রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রেরা। হিসাব বলছে মোট ৫৫ জন পড়ুয়াই পুরুলিয়া বা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। একটি বা দু’টি স্কুলের এত সংখ্যক পড়ুয়া এ ভাবে মেধাতালিকা দখল করে থাকার ঘটনা খুব একটা দেখা না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, অন্য স্কুলগুলি কেন পিছিয়ে গেল?

শুক্রবার ফলঘোষণার সময় বিষয়টি উল্লেখ করেন উচ্চশিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য নিজেও। তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির কথা মাথায় রেখেই পরীক্ষা পদ্ধতিতে বদল আনা হয়েছে। সেই অনুযায়ী পাঁচ থেকে দশ শতাংশ প্রশ্ন করা হয়েছিল একটু শক্ত। যে দু’টি স্কুল এই ধরনের অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে পড়ুয়াদের তৈরি করতে পেরেছে, তারা ভাল ফল করেছে।” যদিও উচ্চ মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পর্বে এমন প্রশ্ন হবে না, জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি। সেখানে ব্যাখ্যাধর্মী উত্তর দিতে হবে। যে ধরনের প্রশ্নের সঙ্গে এত দিন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পরিচিত।

উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম পর্বের পরীক্ষায় সম্ভাব্য প্রথম স্থানে রয়েছে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের দুই ছাত্র প্রীতম বল্লভ ও আদিত্যনারায়াণ জানা। দ্বিতীয় স্থানে পুরুলিয়া ও নরেন্দ্রপুর মিলিয়ে মোট ৯ জন ছাত্র রয়েছে। তৃতীয় স্থানেও রয়েছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক বিদ্যালয়ের এক জন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ৯৮.৪২ শতাংশ পেয়ে ৯ জন। তার মধ্যে রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ থেকে রয়েছে ৪ জন। পাঁচ জন রয়েছে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়।

কী করে এত ভাল ফল করল রামকৃষ্ণ মিশনের দু’টি স্কুল? প্রশ্নের উত্তরে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ, পুরুলিয়ার সম্পাদক স্বামী শিবপ্রদানন্দ বলেন, “সাফল্যের মূল মন্ত্র হচ্ছে একাগ্রতা। আমাদের হস্টেলে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। এখানকার পড়ুয়াদের সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হয়। তার ফলেই নয়া ব্যবস্থায় অতিরিক্ত সুবিধা পেয়েছে আমাদের ছাত্রেরা।” তিনি জানিয়েছেন, মিশনের পড়ুয়াদের ওএম‌আর শিটে পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস করানো হয়েছে নিয়মিত। এর সুফল পেয়েছে পরীক্ষার্থীরা।

প্রায় একই কথা বলেছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ইষ্টেশানন্দ বলেন, “আমাদের স্কুলে ১২২ জন পরীক্ষার্থী ছিল তারা সকলেই ভাল ফলাফল করেছে। তার মধ্যে ৩১ জন মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। এখানকার বেশির ভাগ পড়ুয়াই সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়। ফলে তারা অতিরিক্ত সুবিধা পেয়েছে।”

কলকাতার অন্যতম নামী সরকারি স্কুলগুলি গত কয়েক বছরে পিছিয়ে পড়েছে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের ফলে। এ বার হিন্দু বা হেয়ারের মতো স্কুলের কোনও ছাত্রের নাম উঠে আসেনি সম্ভাব্য মেধাতালিকায়। কলকাতা থেকে মাত্র চারটি স্কুলের চার জন প়ড়ুয়ার নাম রয়েছে মেধাতালিকায়।

এ প্রসঙ্গে হিন্দু স্কুলের প্রধানশিক্ষক তপনকুমার মাইতি বলেন, “আবাসিক স্কুল হওয়ায় রামকৃষ্ণ মিশন কিছুটা এগিয়ে থাকেই। তা ছাড়া সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে রয়েছে অন্য নানা সমস্যা। প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া থেকে শিক্ষকের অভাব— সবই প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে।” এ প্রসঙ্গে তিনি তুলে এনেছেন লটারি পদ্ধতিতে ভর্তির প্রসঙ্গও। তাঁর দাবি, “সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে মেধার ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি উঠে গিয়েছে অনেক কাল। লটারির মাধ্যমে ভর্তি হয় এখন। এখানে যারা পড়তে আসে, বেশিরভাগ প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। তার উপর বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব থাকায় সার্বিক ফলাফলও খারাপ হয়।”

WBCHSE result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy