মঙ্গলবার ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার চতুর্থ দিন। এ দিন ছিল ভূগোল পরীক্ষা। এ দিকে দুপুর বেলা বিধানসভা যাওয়ার পথে হঠাৎই মাধ্যমিক পরীক্ষা কেমন চলছে, খোঁজ নিতে স্কুলে হাজির স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর এলাকার ভবানীপুর ইউনাইটেড মিশন স্কুলে তখন পুরোদমে চলছে পরীক্ষা। মমতা সেখানে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি কথা বলেন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও।
আরও পড়ুন:
আচমকা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে অবাক হন অভিভাবকেরা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা মুখ্যমন্ত্রীকে স্কুলের ভিতরে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানান। তবে পরীক্ষা চলছে বলে তিনি রাজি হননি। মমতা বলেন, ‘‘এখন ভিতরে যাব না।" স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে সকল পরীক্ষার্থীদের আরও শুভেচ্ছা বার্তা দেন তিনি।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার্থীদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সেই খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের বলেন, ‘‘আগে পরীক্ষায় নম্বর দেওয়া হত না। বর্তমানে সিবিএসই, আইসিএসই বোর্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে সমস্যা না হয়। এখন সিলেবাস অনেক সোজা করে দেওয়া হয়েছে।’’
মমতা অভিভাবকদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, "আমি সব সময়ে বলি, প্রশ্নপত্র যেন শক্ত না হয়। সবাই ভাল ফল করুক, সেটাই আমি চাই। পরীক্ষা ভাল হবে, আমার শুভেচ্ছা রইল।" এক অভিভাবককে তিনি প্রশ্ন করেন, "আপনার মনটা খারাপ কেন?"
পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে এক পরীক্ষার্থী মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম জানায়। মমতা তাকে জিজ্ঞাসা করেন, পরীক্ষা কেমন হয়েছে।
শুধু পরীক্ষার্থীদের আশীর্বাদ বা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা নয়। ভবানীপুর ইউনাইটেড মিশন স্কুলের বিষয়ে একাধিক খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ১৯২ বছরের পুরনো এই স্কুলবাড়ি রং করানোর নির্দেশ দেন। এই কাজের জন্য কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, সে কথাও স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান তিনি। শিক্ষিকাদের বলেন, "আপনারা সবাই ভাল থাকবেন। পরের মঙ্গলবারের মধ্যে আমার লোক এসে আপনাদের থেকে কোথায় কী রং করতে হবে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যাবে। আপনারা সেই খসড়া তৈরি করে রাখবেন।"
গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বিগত কয়েক বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা ঘিরে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনকি এ বছরও পরীক্ষা চলাকালীন ১৬ জন মোবাইল-সহ ধরা পড়েছে। তবে ভূগোল পরীক্ষায প্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, মোবাইল-সহ কেউ ধরা পড়েনি। পাশাপাশি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি, যাতে রিপোর্ট করতে হয় কোনও পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।