উচ্চ মাধ্যমিকে একটি বিষয়ে ফেল? রয়েছে সংসদের নয়া পরীক্ষা ব্যবস্থা, বেড়েছে আবেদন করার দিনক্ষণ

সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। কিন্তু, চাইলে আবার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দিতে পারবেন। এমনই সুযোগ করে দিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তবে যারা ৯(২) রেগুলেশনে উত্তীর্ণ, তাঁদের জন্যই এই সুযোগ। তার জন্য শুরু হয়েছিল আবেদনগ্রহণ প্রক্রিয়াও। কিন্তু যে সংখ্যক পড়ুয়ার আবেদনপত্র জমা পড়ার কথা তার থেকে অনেকটাই কম পড়েছে বলে মনে করছে শিক্ষা মহলের একাংশ। এমতাবস্থায় আবেদনগ্রহণ প্রক্রিয়ার দিনক্ষণ বৃদ্ধি করা হয়েছে শিক্ষা সংসদের তরফে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা সুযোগ দিয়েছি পড়ুয়াদের স্বার্থে। প্রায় ১০০টার কাছে জমা পড়েছে আবেদনপত্র। যদি কোনও পড়ুয়া প্রথম সুযোগে আবেদনপত্র জমা না করে থাকে, সে যাতে আবার সুযোগ পায় তাই আবেদনগ্রহণ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করা হয়েছে।’’

৯(২) রেগুলেশন কী?

উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষা হয় মোট ছ’টি বিষয়ে। যার মধ্যে দু’টি ভাষাভিত্তিক বিষয়ে বাধ্যতামূলক পাশ করতে হয়। এ ছাড়াও বাকি চারটির মধ্যে তিনটি বিষয়ে পাশ করা বাধ্যতামূলক। ধরা যাক, কোনও পড়ুয়া বাংলা, ইংরেজি, রসায়ন, গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং জীববিদ্যা বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে যদি ওই পড়ুয়া পদার্থবিদ্যায় অনুত্তীর্ণ হয় এবং বাকি বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়, তা হলে সে উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করবে না। বরং ‘বেস্ট অফ ফাইভ’-এর ভিত্তিতে সাধারণ ভাবেই তার আর পদার্থবিদ্যার নম্বর গ্রাহ্য করা হবে না। এই পদ্ধতিতে যারা উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়, তারা ৯(২) রেগুলেশনের মধ্যে পড়ে।

শিক্ষা সংসদের দেওয়া বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে এই ৯(২) রেগুলেশনে যারা পাশ করেছে, তারা চাইলে ফের নতুন সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে পারবে।

ছাত্রছাত্রীদের কী সুবিধা?

শিক্ষা সংসদ সূত্রটি বলছে, ৯(২) রেগুলেশনে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেও দেখা গিয়েছে, জয়েন্টের মতো পরীক্ষায় তারা সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ, জয়েন্ট উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ পেতে গেলে বিজ্ঞান বিভাগের মূল তিনটি বিষয়ে (রসায়ন, গণিত, পদার্থবিদ্যা) উত্তীর্ণ হতেই হয়। তাই এর মধ্যে কোনও একটিতেও যদি পড়ুয়া ফেল করে যায় বা কম নম্বর পায় তবে ৯(২) রেগুলেশনে পাশ করেও লাভ হয় না। তখন তাকে পুনরায় এক বছর অপেক্ষা করতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে ওই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষায় বসতে হয়। কিন্তু সেখানে সে আর রেগুলার প্রার্থী থাকে না। এখানেই শিক্ষা সংসদের তরফে আরও একটি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তারা চাইলে সম্পূর্ণ এক বছর অপেক্ষা না করে নতুন করে সেমেস্টার পদ্ধতিতে রেগুলার প্রার্থী হিসাবে ভর্তি হতে পারবে। তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে ওই প্রার্থীরা। তবে সে ক্ষেত্রে সব বিষয়েই আবার পরীক্ষা দিতে হবে।

দ্য পার্ক ইনস্টিটিশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, ‘‘হয়তো বেশির ভাগ পড়ুয়ার কাছে এমন তথ্যই নেই যে তারা আবার পরীক্ষা দিতে পারবে। তাই এই সময় যে বৃদ্ধি করা হয়েছে তাতে ভালই হয়েছে। স্কুলে প্রধান শিক্ষকদের এই ক্ষেত্রে একটু উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’

কী ভাবে আবেদন করতে হবে?

ছাত্রছাত্রীকে নিজের স্কুল মারফত অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়া রেজ়াল্ট জমা দিতে হবে। ৩০ জুন পর্যন্ত শিক্ষা সংসদের ওয়েবসাইটটি এই প্রক্রিয়ার জন্য খোলা থাকবে।