স্পেশাল এডুকেটর বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষক নিয়োগের বিধি তৈরি করল রাজ্য সরকার। বিধিতে চুক্তিভিত্তিক স্পেশ্যাল এডুকেটর-এর জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের উল্লেখ থাকতে চলেছে।
গত বছর শেষের দিকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষক নিয়োগে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্কুল সার্ভিস কমিশন আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভায এই নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদনও দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে নয়া বিধির খসড়াও। সেখানে বেশ কিছু নতুন বিষয় নিয়োগের জন্য সংযোজন হতে চলেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ১০ বছরের জন্য ওএমআর শিট সংরক্ষণ করে রাখা। তার প্রধান কারণ, এই ওএমআর শিট বিতর্কেই ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও প্রার্থীদের পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেওয়া হবে ওএমআর শিটের প্রতিলিপি।
আরও পড়ুন:
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই প্রথমবার স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এত দিন পর্যন্ত কেবলমাত্র চুক্তিভিত্তিতেই স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ করা হত। এ বার সেই সমস্ত শিক্ষকদের জন্যও নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সংরক্ষিত আসন রাখছে সরকার।
আরও পড়ুন:
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত ১০০টি আসন পিছু ১৪০ জনকে ডাকা হয়। এই নয়া বিধিতে ১০০ জনের জন্য ডাকা হবে ১২০ জনকে।
শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন নিয়মে বিদ্যালয় গুলিতে স্থায়ী ভাবে স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর। কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত ভাবে সম্পন্ন হয় তার দাবি জানাচ্ছি। না হলে একটা প্যানেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ১০ বছর পেরিয়ে যাবে।’’
উল্লেখ্য, প্রাথমিক স্তরে সার্কলভিত্তিক প্রায় ১১০০ জন স্পেশ্যাল এডুকেটর চুক্তিতে নিযুক্ত রয়েছেন বর্তমানে। এই সমস্ত শিক্ষককে পৃথক ভাবে স্থায়ীকরণের জন্য আইন সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও রয়েছে।
স্পেশ্যাল এডুকেটর হওয়ার জন্য রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (আরএসআই) অনুমোদিত কেন্দ্রীয় সংস্থা থেকে স্পেশ্যাল বিএড অথবা ডিএলএড ডিগ্রি বাধ্যতামূলক। তবে এত দিন পর্যন্ত এই স্পেশ্যাল ডিগ্রি পাওয়া শিক্ষকেরা সাধারণ শিক্ষকের মতোই নিযুক্ত হতেন। বর্তমানে স্পেশ্যাল বিএড বা ডিএলএড-সহ সহকারী শিক্ষক হিসাবে ৩৯১ জন রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আগেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ করার বিষয়ে। শিক্ষা দফতর অনেক দেরি করল। যাই হোক অবশেষে স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা পথ এগোল এটাই আশার। তবে অনেকের বয়স পেরিয়ে গেছে এই অহেতুক দেরির জন্য।’’
শীর্ষ আদালত এই সংক্রান্ত একটি মামলায় আগেই জানিয়েছিল, চারটি স্কুল পিছু এক জন করে স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ করতে হবে রাজ্যকে। সে ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ২০ হাজারের বেশি হবে।