Advertisement
১১ মে ২০২৪

গাজায় ইজরায়েলি হামলা চলছেই, মৃত ৫০৭

ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫০৭। রবিবার ছিল এই সংঘর্ষের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। ওই দিন প্রায় ১০০ প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারান। অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। রবিবার ১৩ জন ইজরায়েলি সেনারও মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতের এই সংঘর্ষ নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠকে বসে।

ইজরায়েলি হামলায় নিহত শিশু। ছবি: রয়টার্স।

ইজরায়েলি হামলায় নিহত শিশু। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৪ ১৮:০১
Share: Save:

ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষে প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫০৭। রবিবার ছিল এই সংঘর্ষের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। ওই দিন প্রায় ১০০ প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারান। অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। রবিবার ১৩ জন ইজরায়েলি সেনারও মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার রাতের এই সংঘর্ষ নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্যও আবেদন করা হয়। ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, মূলত গাজার উত্তরে শেজাইয়া প্রদেশে অভিযান চলছে। রবিবার এখানেই ইজরায়েলি সেনার গোলাবর্ষণে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলি হামলার থেকে রক্ষা পায়নি দক্ষিণ গাজাও। সেখানে গাজা ও মিশরের সীমান্তে এমনই এক হামলায় এক পরিবারের ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিনেই খান ইউনিস-এ একটি বাড়িতে গোলা আঘাত হানে। প্রাণভয়ে বাসিন্দারা বাড়ি ছাড়ার সময়ে আবার গোলাবর্ষণ হয়। মারা যান ওই বাড়ির ১০ জন বাসিন্দা। সোমবার সকালেও শেজাইয়া প্রদেশে হামলা জারি থাকে। প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইজরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। হাসপাতালগুলি এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

এরই পাশাপাশি, ক্রমাগত ইজরায়েলি আক্রমণে গৃহহারার সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সূত্রে খবর, এর মধ্যে প্রায় এক লাখ প্যালেস্তিনীয় ঘর ছেড়েছেন। তাদের আশ্রয় শিবিরে ৮৩ হাজারেরও বেশি প্যালেস্তিনীয় আশ্রয় নিয়েছেন। রবিবারই আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ৪০০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে বলে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে। তবে আশ্রয় শিবিরের তুলনায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। ইজরায়েলি সেনা এলাকা ছেড়ে যেতে বললেও অনেকের তাই কার্যত কোথাও যাওয়ার নেই। গাজার কোনও জায়গাই আর সাধারণ নাগরিকদের জন্য সুরক্ষিত নয় বলে প্যালেস্তিনীয় সূত্রে খবর।

শেজাইয়া প্রদেশে অভিযান চালানোর সময়ে ১৩ জন ইজরায়েলি সেনার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুতে গভীর দুঃখপ্রকাশ করে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু জানান, হামাসের ক্ষমতা দুর্বল করা এবং দক্ষিণ ইজরায়েলকে হামাসের হামলা থেকে সুরক্ষিত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে। নিহত সেনাদের মধ্যে দু’জন আমেরিকা ও ইজরায়েলের যৌথ নাগরিক। রবিবারই শাউল আরন নামের এক ইজরায়েলি সেনাকে বন্দি করা হয়েছে বলে হামাস ঘোষণা করে। এই ঘোষণায় গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে উদ্যাপন শুরু হয়ে যায়। শাউলের পরিচয়পত্রও দেখায় হামাস। তবে তাঁর কোনও ছবি হামাস দেখাতে পারেনি। যদিও ইজরায়েলি সেনা এই খবর অস্বীকার করছে। ২০০৬-এ গাজায় অভিযানের সময়ে ইজরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতকে হামাস বন্দি করেছিল। পাঁচ বছর পরে তাঁকে ছাড়াতে ইজরায়েলকে এক হাজার প্যালেস্তিনীয় বন্দিকে মুক্তি দিতে হয়েছিল। তাই ইজরায়েলি সেনাকে বন্দি করা হামাসের অন্যতম লক্ষ্য। ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, সোমবার সকালে ১০ জন জঙ্গি দক্ষিণ ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে। তবে সেনা ও বিমানবাহিনীর যৌথ আক্রমণে তাদের মৃত্যু হয়। হামাসও এ দিন ইজরায়েল লক্ষ্য করে ৮৭টি রকেট ছোড়ে। অধিকাংশই ক্ষেপণাস্ত্র-রোধী সুরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ ধ্বংস করে দেয়। এতে কোনও প্রাণহানি হয়নি।

সংঘর্ষ থামাতে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে। রবিবার কাতারের দোহায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান-কি-মুন প্যালেস্তাইন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও হামাস নেতা খালেদ মেশালের সঙ্গে আলোচনা করেন। অবিলম্বে রক্তপাত বন্ধ করার আবেদন জানান তিনি। এর পরে কুয়েত, মিশর, জর্ডন এবং ইজরায়েলেও যাবেন মুন। মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরিরও আলোচনার জন্য কায়রো পৌঁছনোর কথা। তবে হামাসের যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত, রাফা সীমান্ত খোলার ব্যাপারে মিশর এখন নীরব। আর কাতারের মধ্যস্থতা নিয়ে ইজরায়েল আপত্তি তুলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gaza israel palestaine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE