Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গাজায় চলছে স্থলপথে অভিযান, মৃত ৩১৮

গাজায় স্থলপথে অভিযান জারি রাখল ইজরায়েল। বাড়ল মৃতের সংখ্যা। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলা এই আক্রমণে এখনও পর্যন্ত ৩১৮ জন প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়েছে। যাঁর মধ্যে ৭০টি শিশুও রয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন ইজরায়েলিও।

ইজরায়েলি হানায় গাজায় মৃত প্যালেস্তাইনের তিন শিশু। ছবি: রয়টার্স।

ইজরায়েলি হানায় গাজায় মৃত প্যালেস্তাইনের তিন শিশু। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ১৭:২৯
Share: Save:

গাজায় স্থলপথে অভিযান জারি রাখল ইজরায়েল। বাড়ল মৃতের সংখ্যা। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলা এই আক্রমণে এখনও পর্যন্ত ৩১৮ জন প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়েছে। যাঁর মধ্যে ৭০টি শিশুও রয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন ইজরায়েলিও।

ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, মূলত গাজার উত্তরে বেইট হানোউন, বেইট লাহিয়া অঞ্চলে যুদ্ধ চলছে। সেনার ইঞ্জিনিয়ার আড়াই কিলোমিটার ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে চাইছে। তাদের মূল লক্ষ্য হামাসের তৈরি করা সুড়ঙ্গ এবং রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা ধ্বংস করা।

শুক্রবার রাতে উত্তর গাজায় আক্রমণ চালায় ইজরায়েল। সঙ্গে চলে বিমান ও ড্রোনের হামলা-সহ প্রবল গোলাবর্ষণও। আক্রমণ জারি থাকে শনিবার সকালেও। গাজায় ১৮ লক্ষের কিছু বেশি মানুষের বাস। জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৫০৪৬ জন। এমন জায়গায় স্থলপথে অভিযানে প্রাণহানির প্রবল আশঙ্কা থাকে। বাস্তবে ঘটছেও তাই। শুক্রবার রাতে ইজরায়েলি গোলার আঘাতে একই পরিবারের আট জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে চার জন শিশু আছে। সব মিলিয়ে গত দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। এর মধ্যে ১৫ জন সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। এ ক’দিনের যুদ্ধে ধ্বংস হয়েছে প্রায় ২০ হাজার বাড়ি। নাগরিক পরিকাঠামোও বিপর্যস্ত।

ইজরায়েলি সেনা ১৭ জন হামাস-বিদ্রোহীর হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ১৩ জন বিদ্রোহীকে গ্রেফতারের কথাও জানানো হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে ১৩টি সুড়ঙ্গ এবং ৯৫টি রকেট লঞ্চার। এর মধ্যে একটি সুড়ঙ্গ প্রায় ৩০ মিটার গভীর ছিল। তা ছাড়া, এ দিন ৩৭টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু এই আক্রমণের পরেও হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করা যায়নি। এ দিন ১৮টি রকেট ছোড়া হয়। যদিও অধিকাংশ রকেটই ‘আয়রণ ডোম’ ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।

ক্রমাগত আক্রমণে বাড়ছে ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সূত্রে খবর, তাদের পরিচালিত ৩৪টি শিবিরে এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এই সংখ্যা বিপদগ্রস্ত গাজার বাসিন্দাদের তুলনায় অনেক কম। ইজরায়েল সাধারণ নাগরিকদের সংঘর্ষস্থল থেকে সরে যেতে বললেও অনেক বাসিন্দারই কার্যত কোথাও যাওয়ার নেই। মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করলেও ইজরায়েলের অভিযোগ সাধারণ মানুষকে হামাস তাদের ‘হিউম্যান শিল্ড’ হিসেবে ব্যবহার করছে। হামাস যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে অবিলম্বে তাদের শর্তে যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে। না হলে ইজরায়েলকে ফল ভুগতে হবে বলেও হুমকি দিয়েছে হামাস। এ দিন হামাসের তরফে দাবি করা হয়, গাজার নানা জায়গায় ইজরায়েলি সেনার অগ্রগতি আটকানো সম্ভব হয়েছে। ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে তারা মর্টার আক্রমণ চালাচ্ছে।

বাধ্য হয়ে স্থলপথে অভিযানে নামতে হয়েছে বলে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু দাবি করেছেন। প্রয়োজনে এই আক্রমণের পরিধি বাড়ানো হতে পারে বলেও তিনি হুমকি দেন। তবে গাজা দখল করা বা হামাসকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার কোনও ইচ্ছে ইজরায়েলের নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এ দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইজরায়েলের আত্মরক্ষার দাবি মানলেও সংঘর্ষ যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে সে দিকে নজর রাখতে বলেছেন।

পাশাপাশি চলছে শান্তির প্রক্রিয়াও। পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক হয়েছে। এ দিন মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন। অন্য দিকে, প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট কাতার সফরে গিয়েছেন। কাতার ও তুরস্তকে মিশরের দেওয়া শান্তি প্রস্তাবে হামাসকে রাজি করানোর জন্য চেষ্টা করতে তিনি আবেদন করেছেন। মাহমুদ আব্বাসের ফাতহা দলের বিরোধী শক্তি হিসেবেই গাজায় হামাসের উত্থান। কায়রোতে নানা দেশের কূটনীতিকদের আলোচনাও চলছে। যদিও যুদ্ধবিরতির জন্য হামাসের অন্যতম শর্ত, মিশর ও গাজার মধ্যে রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়া বিষয়ে মিশর বা ইজরায়েল নীরব রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gaza israel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE