স্কুল স্তর থেকেই পড়ুয়াদের কর্মক্ষম করে তুলতে হবে। এ জন্য পাঠ্যক্রমের বাইরের বিষয়গুলিতেও তাঁদের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে হবে বলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ২০২০ সালে প্রবর্তিত জাতীয় শিক্ষা নীতিতে। তবে, যাঁরা ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে গিয়েছেন এবং চাকরির সন্ধান করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ কতটা রয়েছে?
সাধারণত বৃত্তিমূলক বিষয় কিংবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটস (আইটিআই) কোর্সগুলি করার পর অ্যাপ্রেন্টিস হিসাবে কাজ শেখার সুযোগ থাকে। তবে, সরকারি কোর্সের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার আগে যাঁরা নিজের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান, তাঁদের সুযোগ দেবে কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনিক্যাল টিচারস ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইটিটিটিআর)।
ওই প্রতিষ্ঠানের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভাগীয় প্রধান নবীন বি.পি বলেন, “রাজ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের সকলেই যে চাকরি পান, তা নয়। এমনকি, উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেও স্নাতক বা স্নাতকোত্তর যোগ্যতা সম্পন্নদের মধ্যে কর্মদক্ষতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। এর ফলে কাজের বাজারে চাকরির জন্য তাঁদের প্রস্তুতির লড়াইটাও কঠিন হয়ে উঠছে।”
সেই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানের সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড স্কিল ডেভেলপমেন্টের তরফে একাধিক কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে। কাজের বাজারে চাহিদার নিরিখে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ক্লাস করানো হবে। এ ছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে কেমন দক্ষতা সম্পন্নদের চাহিদা রয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা করবেন এনআইটিটিটিআর-এর অধ্যাপকরা।
আরও পড়ুন:
কোর্সের তালিকা:
- প্রফেশনাল ওয়াটারপ্রুফিং
- কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল (সিএনসি) মেশিন ট্রেনিং
- ওয়াটার কোয়ালিটি টেস্টিং
- স্ট্রাকচারাল ডিজ়াইন অ্যান্ড অ্যানালিসিস ইউজ়িং এক্সটেন্ডেন্ড থ্রি ডাইমেনশনাল অ্যানালিসি অফ বিল্ডিং সিস্টেমস (ইট্যাবস)
- ভিডিয়ো ফিল্ম মেকিং
- কম্পিউটার হার্ডওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং
- পাইথন প্রোগ্রামিং অ্যান্ড আর
- প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার (পিএলসি) অ্যান্ড ইটস অ্যাপ্লিকেশন
- ইলেকট্রিক্যাল টেকনিশিয়ান
- ম্যানেজেরিয়াল প্র্যাকটিসেস
কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে নবীন বি.পি আরও বলেন, “শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় লেখা শব্দের বাস্তবায়ন করাই যে কোনও ক্ষেত্রে চাকরির মূল লক্ষ্য নয়। কাজের জগতে বিশেষ করে প্রযুক্তি এবং কারিগরি বিভাগের চাকরিতে বিভিন্ন ধরনের বিষয়ে দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। এ জন্যই ওয়াটারপ্রুফিং-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় সংস্থার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ক্লাস করানো হবে। এর ফলে পেশাদার হিসাবে কী ভাবে কাজ করতে হবে বা দক্ষতার ভিত্তিতে কোথায় কেমন ধরনের চাকরির সুযোগ রয়েছে, তা নিয়ে পড়ুয়াদের ধারণা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশনের নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই সমস্ত কোর্সের পাঠক্রম তৈরি করা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প খরচে কোর্সের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। ১৯৬৫ থেকে এখনও পর্যন্ত এই ধরনের একাধিক কোর্সের মাধ্যমে রাজ্যের পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে চলেছে এনআইটিটিটিআর, কলকাতা। বর্তমানে উল্লিখিত কোর্সগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিন থেকে ছ’মাসের কোর্সগুলি করার জন্য খরচ পড়বে ৬ হাজার টাকা। আবেদনের শেষ দিন ৩১ জুলাই।