‘এক আকাশের নীচে’, গাঁটছড়া’, ‘ফুলকি’ যাঁরা দেখেছেন তাঁরা রানা মিত্রকে চেনেন। বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তিনি খলনায়ক। মাঝে অনেক দিন ছোট পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে। কোথায় গেলেন রানা? খবর, এ বার তিনি যাত্রায় অভিনয় করবেন। একটি যাত্রা দলের ‘রক্তে রাঙা রাজকাহিনী’ পালায় তাঁকে ঘিরে গল্প এগোবে।
পর্দা বা মঞ্চের বহু অভিনেতা এর আগে যাত্রাপালায় অভিনয় করেছেন। অনেক দিন পরে যেমন অভিনেত্রী পিয়া সেনগুপ্ত যাত্রা দুনিয়ায় ফিরেছেন। একটা সময় নিয়মিত যাত্রা করতেন তিনি। প্রায় প্রতি যাত্রার মরশুমে আর এক অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে মঞ্চের আর এক মাধ্যমে নিয়মিত অভিনয় করতে দেখা যায়। রানা এত দেরিতে এই মাধ্যমে কেন? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার ডট কম।
রানার মতে, “কোনও কাজ শুরুর নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। এর আগেও ডাক পেয়েছি। তখন ছোট পর্দায় প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতাম। ফলে, ইচ্ছা থাকলেও উপায় হত না। এখন আমার হাতে যাত্রাপালায় অভিনয় করার জন্য সময় রয়েছে। অভিনয়ের এই মাধ্যমই বা বাকি থাকে কেন? তাই রাজি হলাম।”
অভিনেতারা বলেন, যাত্রাপালার অভিনয় উঁচু তারে বাঁধা। একবার যাত্রায় অভিনয় শুরু করলে রানা কি আর ছোট পর্দায় ফিরতে পারবেন? ধারাবাহিকে স্থায়িত্ব কমে গিয়েছে বলেই কি এই সিদ্ধান্ত তাঁর?
রানা জেনেছেন, এখন আর আগের মতো গলা চড়িয়ে অভিনয় করতে হয় না যাত্রা শিল্পীদের। কারণ, এখন মঞ্চ জুড়ে মাইকের ব্যবহার। “এখন কমবেশি সকলেই ধারাবাহিকের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ। আগে ধরে ধরে গল্প লেখা হত। এখন চ্যানেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রত্যেক দিনের গল্প প্রত্যেকদিন লেখা হয়। এতে মান পড়ে গিয়েছে ছোট পর্দার”, দাবি তাঁর। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি নিজের মায়ের উদাহরণ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমার মায়ের বয়স ৮০ বছর। তিনিই ধারাবাহিক দেখতে চান না। অথচ, আগে মাকে টেলিভিশনের সামনে থেকে ওঠানো যেত না!” রানার পাল্টা প্রশ্ন, তাঁর মা-ই যদি ধারাবাহিক দেখতে না চান তা হলে তাঁর মায়ের বয়সীরাও হয়তো একই পথে হাঁটছেন। তা হলে এখন ধারাবাহিক কারা দেখেন? যদিও ছোট পর্দা তাঁর অন্নদাতা। তাঁর সংসার প্রতিপালনে একটা সময়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। তাই সেই মাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তাঁকে কষ্ট দেয়, এ কথাও জানাতে ভোলেননি।
আরও পড়ুন:
রানা ‘রক্তে রাঙা রাজকাহিনী’ পালাতেও খলনায়ক চরিত্রে! এত বছর পরে নতুন যে মাধ্যমে পা রাখতে চলেছেন সেখানেও ধূসর চরিত্রে অভিনয়?
“আপনারা নায়ক বা খলনায়ক নিয়ে মাথা ঘামান। আমি ঘামাই না। আমার দৃষ্টিতে নায়ককে কাহিনিকার বা চিত্রনাট্যকার খুবই যত্ন নিয়ে বানান। তার পরেও খলনায়কদের যেন আলাদা জৌলুস থাকে। যেমন, ‘শোলে’। ছবির নাম উঠলেই আগে ‘গব্বর সিং’ আমজাদ খানকে মনে পড়ে সকলের। তার পর দুই নায়ক ‘জয়’ আর ‘বীরু’র কথা।” তিনি এও জানিয়েছেন, তথাকথিত ‘ভিলেনি’ তিনি এখানে করবেন না। কী কী কারণে একজন মানুষ খারাপ হয়ে ওঠে, সেই গল্পই দেখানো হবে এই পালায়। রানাকে ঘিরে আবর্তিত হবে গল্প। তাই তিনি রাজি। পাশাপাশি, তাঁর কাছে যাত্রায় অভিনয়ের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ও বড় ব্যাপার। হাজার হাজার লোকের সামনে অভিনয়, তাঁদের প্রশংসা, হাততালি কুড়োনোও রানার কাছে অনেক। অগস্টে শুরু হবে মহড়া।