‘টি সিরিজ’-এর বিরুদ্ধে ‘মিস্টার মাম্মি’র গল্প চুরির অভিযোগ আনলেন অগ্নিদেব-পুত্র আকাশ চট্টোপাধ্যায়।
আরও এক বার টলিপাড়ায় বিষয়ভাবনা ‘চুরি’র অভিযোগ উঠল। সম্প্রতি বলিউডের ‘মিস্টার মাম্মি’ ছবিটির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। শাদ আলি পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় দম্পতি রিতেশ দেশমুখ ও জেনেলিয়া ডি’সুজা। কমেডি ঘরানার ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই নেটদুনিয়ায় উৎসাহ চোখে পড়েছে। ছবিতে রিতেশের চরিত্রটি কোনও অজ্ঞাত কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তবে এ বারে এই ছবির প্রযোজক ‘টি সিরিজ’-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন টলিপাড়ার আর এক পরিচালক-প্রযোজক আকাশ চট্টোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছেন, এই ছবির কনসেপ্ট তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত।
কিন্তু গল্প চুরি গেল কী করে? জানতে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে আকাশের সঙ্গে যোগায়োগ করা হলে তিনি বললেন, ‘‘নব্বইয়ের দশকে হলিউডে আরনল্ড সোয়াৎজেনেগার ‘জুনিয়র’ বলে একটা ছবি করেন। সেখানে তাঁর চরিত্রটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। ২০১৯ সালে আমি এ রকম একটা চিত্রনাট্য লিখি এবং টি সিরিজ-এর কর্ণধারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওঁর গল্পটা পছন্দ হয়। কিন্তু তার পর দেখলাম সংস্থার পক্ষ থেকে এ রকম একটা ছবির ঘোষণা করে। এখন ট্রেলার দেখার পর নিশ্চিত হই যে আমার বিষয়ভাবনার আধারেই ‘মিস্টার মাম্মি’ ছবিটা তৈরি।’’ টলিউ়ডে আকাশের আরও একটা পরিচয় রয়েছে। তিনি পরিচালক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের সন্তান। বিষয়টি নিয়ে তাঁর কী অভিমত? আকাশের কথায়, ‘‘বাবা জানেন। কিন্তু বাবাও বলেছেন, আগে আইনজীবীর পরামর্শ করে তার পরে পদক্ষেপ করা উচিত।’’ প্রসঙ্গত, আকাশের আইনজীবী নির্নিমেষ দুবে আবার পরিচালকের সঙ্গেই চিত্রনাট্য লিখেছেন।
হরিয়ানার প্রেক্ষাপটে গল্পটি ভেবেছিলেন আকাশ। ছবির নাম রাখা হয়েছিল ‘ভিকি পেট সে’। তাঁর দাবি, মুখ্য চরিত্রে আয়ুষ্মান খুরানাকে ভাবা হয়েছিল। প্রযোজনা সংস্থার তাতে কোনও আপত্তি ছিল না। আকাশ বললেন, ‘‘দু’বছর আগে হঠাৎ এক দিন দেখলাম, কপিল শর্মা তাঁর শো-এ আয়ুষ্মানকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘আপনি কি এ রকম কোনও ছবিতে অভিনয় করবেন যেখানে আপনি অন্তঃসত্ত্বা?’’ জবাবে আয়ুষ্মান এটাকে গুজব বলে এড়িয়ে যান। তখনও জানতাম, ছবিটা আমিই পরিচালনা করব।’’ গত বছর প্রথম জানা গিয়েছিল, রিতেশ দেশমুখ এবং জেনেলিয়া ‘মিস্টার মাম্মি’ করছেন। পরিচালক শাদ আলি। তখন কেন কোনও পদক্ষেপ করেননি আকাশ? তাঁর বক্তব্য, ‘‘আইনজীবী আমাকে বলেন যে, বিষয়ভাবনায় কিছুটা বদল করা হতে পারে। তা ছাড়া ওঁরা শক্তিশালী। অনেক টাকার বিষয়। ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তখনই পদক্ষেপ করিনি। কিন্তু এ বার ট্রেলার দেখে নিশ্চিত হয়ে সমাজমাধ্যমে জানাতে বাধ্য হলাম।’’ সোমবার এই মর্মে আকাশ ফেসবুকে একটি পোস্টও করেছেন।
তা হলে এর পর কী করবেন আকাশ? তাঁর কথায় ‘‘আমার চিত্রনাট্য রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনে দাখিল করা আছে। আমি কোনও টাকা চাই না। আমি শুধু এই ছবিতে আমার প্রাপ্র্য নামটা দেখতে পেলেই খুশি। আইনজীবীর সঙ্গে কথাও বলেছি। হয়তো প্রযোজনা সংস্থাকে আমরা আইনি নোটিস পাঠাবো।’’
উল্লেখ্য, এর আগে একাধিক ছবিতে অগ্নিদেবের সহকারি হিসেবে কাজ করেছেন আকাশ। নিজের সংস্থা (এসিপি এন্টারটেইনেমন্ট) অধীনে তিনি সঞ্জয় নাগ পরিচালিত ‘গুড মর্নিং শানশাইন’ এবং ‘জিন্দগি কশমকাশ’ এর মতো ছবি প্রযোজনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগে এ রকমই অভিযোগ উঠেছিল বলিউডের অমর কৌশিক পরিচালিত ‘বালা’ ছবিটিকে নিয়ে। আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত এই ছবির মূল ভাবনা ছিল টলিপাড়ার পরিচালক পাভেলের। এ দিকে জৈনক লেখক গল্প চুরির অভিযোগ আনেন। পরে অবশ্য আইনের রায় যায় ‘বালা’র প্রযোজক দীনেশ ভিজানের পক্ষে। এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে পাভেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পরিচালক বলেন, ‘‘মিস্টার মাম্মির ট্রেলার দেখেছি। ২০১৫ সালে আমিও এ রকম একটা ছবি ভেবেছিলাম যেখানে এক জন পুরুষ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যান। গল্পটা আমি তখন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে শোনাই। ছবির নাম ছিল ‘মাবা’। তার মানে কি, আমিও আইনি পথে হাঁটব? আসলে এখন দাঁড়িয়ে ছবিটা আমি আর করতে চাই না।’’ তা হলে আকাশের কী করা উচিত? পাভেলের কথায়, ‘‘একটাই কথা বলব টাকা-পয়সাটা বড় কথা নয়। আইন আইনের পথে এগোবে। তাই ওর কাছে উপযুক্ত প্রমাণ থাকলে অবশ্যই আইনি পথে এগোনো উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy