আমার মাত্র একটি ছবির নায়িকা রাইমা সেন! কী যে আফসোস। আসলে আমি খুব ধীরেসুস্থে চলি। অন্যরা এসেই কেমন ১২-১৩টা ছবি বানিয়ে ফেলেন। আমি পারি না। কিন্তু ওই একটি ছবিই আমাদের দীর্ঘ বন্ধুত্বের সূচনা করেছিল।
৭ নভেম্বর আমার দুই প্রিয় নায়িকার জন্মদিন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর রাইমা সেন। দু’জনেই আমার ‘অনুরণন’ ছবিতে ছিলেন। এই ছবি আমার সেনবাড়িতে পা রাখার ছাড়পত্র। রাইমা বলেছিল, সুচিত্রা সেন আমার ছবি দেখেছিলেন। নাতনির অভিনয়ও। দেখে বলেছিলেন, “অনিরুদ্ধ কোনও দিন ডাকলে ওকে না বলবি না। দরকারে পয়সা না নিয়ে কাজ করবি।” দিদিমার কথা রেখেছিল ও। আমার ‘বুনো হাঁস’ ছবিতে একটা গানের দৃশ্যে ওর অভিনয়। রাইমা আগের দিনে প্রচণ্ড অসুস্থ। সমানে বমি করেছে। শুটিংয়ের দিন ওই অবস্থায় সারা রাত জেগে কাজ করে গিয়েছে। ধুলো-ধোঁয়ার মধ্যে! এটাই রাইমা সেন। যার সঙ্গে একবার বন্ধুত্ব হয়ে যায়, তার জন্য ও সব করতে রাজি।
সেনবাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে মুনমুন সেন বা ভরত দেববর্মনের সঙ্গেও আলাপ ছিল। রাইমা ওর মা-বাবার উদার মন পেয়েছে। আমার প্রথম সিরিজ়েরও নায়িকা রাইমা। জানেন, আমার প্রথম সিরিজ়ের জন্য সারা রাত ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানিয়েছে! যেন আমার সিরিজ় জনপ্রিয় হয়।
এই মেয়েই কী যে দুষ্টু! একবার দুষ্টুমি করে আমায় একটা জায়গায় পৌঁছোনোর কথা বলেছিল। ফোন করে জানাল, “আমি ওমুক জায়গায় ওমুক সময়ে থাকব। তুমি এসো।” এই ডাক কী করে উপেক্ষা করি? গিয়ে দেখি, আমার এক বন্ধু তাঁর নতুন প্রেমিকাকে নিয়ে সেখানে প্রেমে মগ্ন। লজ্জায় লাল আমি। রাইমাকে ফোন করতেই ও হেসে সারা! পরে আমিও অবশ্য খুব হেসেছি। খুব ইচ্ছে, এই অভিজ্ঞতা আমার কোনও ছবিতে দৃশ্য হিসাবে রাখব।
রাইমা সেন মানেই যেমন সুচিত্রা সেনের নাতনি, তেমনই দুষ্টু-মিষ্টি লক্ষ্মী একটা মেয়ে। এমন নায়িকার অজস্র পুরুষ অনুরাগী থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে প্রশ্নও উঠবে, রাইমার কবে বিয়ে? এক-এক সময় মনে হয় বলি, আচ্ছা রাইমাকে কি বিয়ে করতেই হবে? তার মানে এটা নয়, আমি ওর বিবাহিত জীবন চাইছি না। বিয়ে হোক বা না হোক, রাইমার মঙ্গল হোক— ‘ভাল বন্ধু’ হিসাবে মন থেকে এটাই চাই।
আর একটা ইচ্ছে আছে। রাইমার ভাল মন ওর চোখমুখ জুড়ে। এমন নিষ্পাপ মুখের এক অভিনেত্রী যদি পর্দায় ‘সিরিয়াল কিলার’ হয় কেমন হবে বলুন তো? আমার আগামী কোনও ছবিতে রাইমাকে কি আপনারা এ ভাবে দেখতে চান?