Advertisement
E-Paper

প্রার্থী মানুষ হিসাবে কেমন, সেটা না জেনে তাঁর সমর্থনে কী করে কথা বলব?

চলতি নির্বাচনকে মাথায় রেখে শুরু আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ বিভাগ ‘ভোটের দিব্যি’। নির্বাচন নিয়ে তাঁদের মনোভাব ব্যক্ত করছেন আপনাদের পরিচিত মুখেরা। এ বারে ভোট নিয়ে লিখলেন সাহেব ভট্টাচার্য।

সাহেব ভট্টাচার্য

সাহেব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৪ ১৫:০৬
Saheb Bhattacharya talks about his political ideology and lok sabha election 2024

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রথম বার ভোট দেওয়ার সময় রাজনৈতিক কারণ যতটা না ছিল, তার থেকেও বেশি মাথায় এটা ছিল যে, এ বার প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলাম। নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারব। কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণের উদ্‌যাপন যাকে বলে! তবে বর্তমানে ভোট দেওয়া মানে গুরুদায়িত্ব। যে প্রার্থীকে ভোট দেব, নির্বাচনের পরে তিনি ক্ষমতায় এলে সমাজ ও দেশের কোন কোন উন্নয়নমূলক কাজ করবেন, সেটা মাথায় রাখতে হয়।

আমার পরিবারে বাবা, কাকা, জ্যাঠা, কেউই রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় নন। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতবাদ থাকলেও বিশেষ কোনও দল নিয়ে কট্টর মনোভাব নেই আমাদের পরিবারের অন্দরে। গোড়ার দিকে মা-বাবা বলতেন, “এই দলকে ভোট দিলে ভাল হয়। এ বার তুমি যেটা ভাল বুঝবে!’

বাড়িতে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হলে মতের অমিল হয়। তবে বিরোধী দল নিয়ে যতটা না তর্ক হয়, একই দল অর্থাৎ যে দলের সমর্থক আমরা, সেই দল নিয়ে দ্বিমত তৈরি হয় বেশি। শুধু মাত্র সাধারণ মানুষ হিসাবে নয়, এক জন পরিচিত মুখ হওয়ার সুবাদে দলের প্রতি আমার কী মনোভাব হওয়া উচিত, তা নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে আর কী!

আগে মা-বাবা সকালে গিয়ে ভোট দিয়ে আসতেন। কিছু বছর ধরে, দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আমি ভোট দিতে যাই। ভোটের দিন হালকা ছুটির মেজাজ থাকে বাড়িতে। বিশেষ কাজকর্ম থাকে না। তবে একটা কথা না বললেই নয়, আজ অবধি ভোটকেন্দ্রে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হইনি।

আকছার দেখা যায়, বিনোদন দুনিয়ার মানুষেরা নির্বাচনের ‘মুখ’ হয়ে উঠছেন। সক্রিয় রাজনীতির জন্য ডাক এসেছে আমার কাছেও। কিন্তু এই মুহূর্তে রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছি না, তাই প্রত্যাখ্যান করেছি বার বার। শুধু প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে নয়, নির্বাচনী প্রচারের ডাক এলেও সজ্ঞানে এড়িয়ে গিয়েছি। কারণ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলাপ নেই আমার। তাঁদের ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে পরিচিত নই আমি। তাঁরা মানুষ হিসাবে কেমন, সেটা না জেনে তাঁদের সমর্থনে কথা বলব, তার পরে যদি আত্মগ্লানি হয়, এই আশঙ্কায় বা দ্বিধায়!

সমস্যাটা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট নীতিতে বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, মানুষকে বিশ্বাস করা রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মানুষের নীতি সহজেই পাল্টে যাচ্ছে, ফলে সমর্থন করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে চার পাশে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

আমার মনে হয়, রাজনীতিবিদ হওয়ার তুলনায় আমার অভিনয় সত্তাই শ্রেয়। তবে ভবিষ্যতে রাজনীতির ময়দানে যোগ দেব কি না, তা পরিস্থিতি বলবে। কারণ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ‘অরাজনৈতিক’ শব্দের অস্তিত্ব আছে বলে মনে করি না আমি। আপনি রাজনীতিতে না জড়ালেও রাজনীতি আপনাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নেবে। যে কোনও ক্ষেত্রে, সেটা অভিনয় জগতে হোক বা খেলাধুলো— সব জায়গায় রাজনীতির নিদর্শন পাবেন। কেউ যদি বলেন, ‘আমি আমার কাজ নিয়ে থাকব। রাজনীতি বুঝি না। তাই রাজনীতি থেকে দূরে থাকি আমি’, সেটা এখন সম্ভব নয়।

তবে অনেকেই দেখি বলে, ‘আরে দূর! ভোট দিয়ে কী হবে!’ এই ভেবে উদাসীন থাকেন। আমি তাঁদের উদ্দেশে বলব, স্বল্প মেয়াদের কথা না ভেবে দূরদর্শিতার উপর নির্ভর করে ভোট দেওয়া উচিত। যাঁরা বাইরে থাকেন বিশেষ করে অন্য রাজ্যে, তাঁরা অনেকে নিজের কেন্দ্রে ভোট দিতে চলে আসেন। কিন্তু যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন, তাঁদের উপর নির্বাচনের সরাসরি দায় পড়ে না। তাঁদের উপর তেমন দায়িত্ব বর্তায় না। আসলে ব্যক্তিবিশেষে, স্থান, কাল ইত্যাদি বিশেষে বিষয়টি নির্ভর করে।

Saheb Bhattacharya Bengali Actor Lok Sabha Elections
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy