যে কোনও খাবার খেয়ে পেট ভরানো নয়, বরং সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে সঠিক পুষ্টিতে। খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে, তবে পাতে রাখতে হবে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, বলেন পুষ্টিবিদেরা। জোর দেন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারেও।
অসুখবিসুখের সঙ্গে লড়াই হোক বা হাড় মজবুত রাখা, হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জরুরি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে যে সব পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রয়োজন হয়, তার মধ্যে অন্যতম হল ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। রোজের ডায়েটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রাখার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। স্যামন, টুনা-সহ নানা সামুদ্রিক মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রচুর মাত্রায় থাকে। কিন্তু সমস্যা হল, যাঁরা নিরামিষ খাবার বেশি খান, তাঁরা কী ভাবে পাবেন ওমেগা-৩?
আখরোট: ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ আখরোট ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস। এতে মেলে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড (এএলএ), যা মস্তিষ্ক এবং হার্টের জন্য উপকারী। নিয়মিত ২-৩টি ভেজানো আখরোট খেলে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। কার্ডিয়োভাস্কুলার অসুখের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ় রক্তচাপ বশে রাখতে সহায়ক। তবে শুধু আখরোট নয়, তার সঙ্গে আরও কয়েকটি জিনিস মিশিয়ে খেলে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।
তিসির বীজ: এতে থাকা আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয়। প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে এতে। ফলে তিসির বীজও অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এটি কার্যকর।
চিয়া বীজ: ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজের পাশাপাশি এতে মেলে এএলএ-ও। শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনের জন্য আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড জরুরি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎসই হল এই বীজ। ২০-২৫ গ্রাম চিয়া বীজ রক্তে এএলএ-র মাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে।
কী ভাবে খাবেন?
ওট্স স্মুদিতে আখরোটের সঙ্গে তিসি অথবা ভেজানো চিয়া বীজ মেশাতে পারেন। চিয়া পুডিংয়ের সঙ্গেও আখরোট খাওয়া যেতে পারে। স্যালাডেও ছড়িয়ে নেওয়া যায় বাদাম এবং পছন্দের কোনও বীজ। দুই ধরনের বীজই স্বল্পমাত্রায় দইয়ে মিশিয়ে আখরোট দিয়ে খাওয়া যায়।
উপকারী হলেও, যে কোনও বীজ বা বাদাম খাওয়া দরকার পরিমিত। কিডনির সমস্যা বা অন্য কোনও অসুখ থাকলে কতটা খাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া দরকার।