দুর্গাপুজোর ক’দিন আগে হঠাৎ করে ডায়েট শুরু করে বা জিমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে চমক দেখানো সহজ নয়। বরং প্রতি দিনের অভ্যাসে ছোটখাটো বদল আনা অনেক বেশি কার্যকর। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ার নিয়মে কিছু সচেতন পরিবর্তন শরীরকে হালকা, ছিপছিপে আর ফিট রাখতে সাহায্য করে। আসলে ওজন নিয়ন্ত্রণ বা সুস্থ চেহারার রহস্য লুকিয়ে আছে থালার আকারে, খাবার খাওয়ার ভঙ্গিতে আর খাওয়ার সময়ে আমাদের মনোযোগে। একটু বুঝে চললে খাবারই হয়ে উঠতে পারে আমাদের সেরা সঙ্গ, শুধু উৎসবের আগে নয়, সারা বছর ধরে শরীরকে প্রাণবন্ত রাখবে।
পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী এমনই ৫টি কৌশলের কথা বলেছেন, যা অনেকেই অভ্যাস করে দেখতে পারেন এখন থেকেই। তাতে খানিক লাভ হবে বলেই আশা পুষ্টিবিদের।
আরও পড়ুন:
বাস্তবসম্মত লক্ষ্য স্থির: পুজোর আর এক মাসও বাকি নেই। এখন যদি স্থির করেন, শরীরের সমস্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলবেন, তা হলে তা বাস্তবসম্মত নয়, এমনকি তা কাম্যও নয়। পুষ্টিবিদ রেশমী বলছেন, ‘‘অবাস্তব লক্ষ্য স্থির করেন অনেকে। তার পর সেখানে পৌঁছোতে না পারলে হতাশ হয়ে ছেড়েও দেন। তাই লক্ষ্য ছোট করা উচিত। নয়তো পূরণ হবে না। এক মাসে সহজেই ৩-৪ কেজি কমানো যায়। ততটুকুই কমানোর চেষ্টা করুন।’’
খাওয়ার পাত্রের আকার বদল: অনেক সময়ে বড় পাত্রে খাবার খেলে পরিমাপ ঠিকঠাক মাপা যায় না। বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তাই থালার মাপ বদলে ফেলুন। ছোট পাত্রে খাওয়া শুরু করুন। ছোট পাত্র ভরে খেলে মানসিক শান্তি হয়। মনে হতে পারে, অনেক খেয়ে নিয়েছেন, পেট ভরে গিয়েছে।
পুষ্টি উপাদানের ভাগাভাগি: রেশমী বলছেন, ‘‘খাবারের পাত্রের এক-চতুর্থাংশ থাকবে কার্বোহাইড্রেট (ভাত, রুটি), এক-চতুর্থাংশ থাকবে প্রোটিন (মাছ, মুরগি অথবা দই), বাকি অর্ধেক থাকবে সব্জি। ছাঁকা তেলে ভাজা কোনও খাবারই খাবেন না।’’
স্যালাড কাটার ধরন বদল: গোল গোল করে স্যালাড না কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। তাতে সব্জি খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। পাত্রের অর্ধেক সব্জি খেতে হলে স্যালাড কাটার ধরন পাল্টাতে হবে। শসা, গাজর, ক্যাপসিকাম যা-ই হোক, গ্রেট করে নিন। চিবোতেও মন চায় না অনেকের। তাঁদের জন্য বিশেষ করে মিহি করে কাটতে হবে। রেশমী বলছেন, ‘‘মাথায় রাখতে হবে, ভাতের সঙ্গে স্যালাড খাচ্ছেন না। স্যালাডের সঙ্গে ভাত বা রুটি খাচ্ছেন। তাই সেটিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।’’
‘মাইন্ডফুল ইটিং’-এর অভ্য়াস করুন। ছবি: সংগৃহীত।
খাওয়ার সময়ে মনের যত্ন: খাওয়ার সময়ে ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে, নয়তো খাবার হজম হবে না। আর তার জন্য প্রয়োজন মনোযোগ। টেলিভিশন, বই বা ফোনের দিকে মন রেখে খাবার খেলে তাতে পুষ্টি শোষণ হয় না শরীরে। এই পদ্ধতিকেই বলা হয় ‘মাইন্ডফুল ইটিং’।