শরৎ গিয়ে শীতের প্রস্ততি শুরু হয়েছে। তার মাঝে এই যে তাপমাত্রার পারদের গরম থেকে ঠান্ডায় নামার সময়, সেটিই হেমন্তকাল। এ সময়ে আবহাওয়া নানা বদলের মধ্যে দিয়ে যায়। ভোরের দিকে হিম পড়ে। বেলা ছোট হতে শুরু করে আচমকাই। ঘড়ির কাঁটা বিকেল সাড়ে চারটে পেরোতে না পেরোতেই অন্ধকার নামে। কখনও বা মেঘ ঘনিয়ে বৃষ্টি নামে হঠাৎ। বৃষ্টি থামলেও দু’-এক দিন থেকে যায় ঠান্ডা ভাব। রাতে হয়তো এসি চালিয়ে ঘুমোতে গেলেন, কিন্তু ভোরের দিকে ঘুম ভাঙল হালকা ঠান্ডার আমেজে। তখন ঘুমচোখে হাতড়ে খুঁজতে হয় চাদর। আর ওই সমস্ত বদলের প্রভাব পড়ে শরীরেও।
হেমন্তের এই সময়টায় তাই জ্বর-জ্বালা-সর্দি-কাশি বাড়ে। বাড়ে ভাইরাসঘটিত রোগের সংক্রমণ। এমতাবস্থায় শরীরকে রোগ-জ্বালা-বেদনা থেকে বাঁচাতে হলে অস্ত্র একটাই— রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো। খুচখাচ সর্দি-জ্বর-গলা ব্যথা-গায়ে ব্যথায় কতই বা ওষুধ খাবেন! তার বদলে যদি নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিই খানিক বাড়িয়ে নেওয়া যায়, তবে তা বহু অসুখকেই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধির তেমন ৭টি খাবারের সন্ধান দিয়েছেন মুম্বইয়ের এক পুষ্টিবিদ রমিতা কউর। তিনি বলছেন, ‘‘খাবারগুলির মধ্যে কয়েকটিও যদি দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কোনও না কোনও ভাবে রাখা যায়, তবে তার সুপ্রভাব দেখতে পাবেন। শরীর অনেক সতেজ থাকবে। বাড়বে রোগের সঙ্গে যুঝবার ক্ষমতাও।’’
আরও পড়ুন:
কী কী খাবারে বাড়বে রোগপ্রতিরোধ?
১। ফল: কমলালেবু, লেবু, আপেল, আমলকি, পেয়ারা, পেঁপের মতো ফলে রয়েছে ভিটামিন সি। যা শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে এবং তার ফলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ শক্তিও।
২। আদা: আদার প্রদাহনাশক ক্ষমতা অত্যন্ত জোরালো। এ ছাড়া আদায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও। যা শরীরে যাওয়া দূষিত এবং বিষাক্ত পদার্থকে বার করে দিতে সাহায্য করে। আর শরীরে যদি ওই ধরনের বিষাক্ত পদার্থ না থাকে, তবে শরীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপগুলিও যথাযথ ভাবে হয়। রোগের সঙ্গে সর্বশক্তি দিয়ে লড়তে পারে শরীর।
৩। রসুন: রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামের একটি উপাদান। যা রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে সর্দি-কাশি-মাথা ধরা-জ্বরের মতো সমস্যা বা ভাইরাল সংক্রমণও সহজে হয় না।
আরও পড়ুন:
৪। শাকপাতা: পালংশাক, কলমিশাক, নটেশাক, কুমড়ো-লাউ-সহ নানা রকম শাকপাতা খাওয়ার চল রয়েছে বঙ্গে। এর মধ্যে অধিকাংশ শাকই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। তা ছাড়াও রয়েছে অন্য পুষ্টিগুণ। যেমন আয়রন, কপার, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ থাকে এই সব শাকে। থাকে বিটা ক্যারোটিনও, যা সংক্রমণের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে।
৫। কাঠবাদাম: এতে রয়েছে ভিটামিন ই। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন কোষগুলির স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
৬। গ্রিন টি: এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা শরীরকে দূষণমুক্ত করে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৭। সূর্যমুখী বীজ: অনেকেই এটি দই, ওটস ইত্যাদির সঙ্গে মেখে প্রাতরাশে খেয়ে থাকেন। সূর্যমুখীর বীজ এখন বাজারেও সহজলভ্য। পুষ্টিবিদ বলছেন, ওই বীজে ভিটামিন ই, সেলেনিয়াম, জ়িঙ্ক রয়েছে। যা শরীর থেকে অতিরিক্ত প্রদাহ দূর করে। যা রোগ প্রতিরোধ শক্তি ভাল রাখার জন্য জরুরি।