পড়াশোনা হোক বা অফিসের কাজ— সবই পণ্ড হতে পারে যদি তাতে মন না থাকে। ছাত্রছাত্রী হলে পড়া বুঝতে অসুবিধা হতে পারে। আর যদি অফিসে কাজ করার সময় মনোযোগ দিতে না পারেন, তবে কাজ ভুল হওয়ার এবং দেরি হওয়ার আশঙ্কা। তাতে আখেরে ক্ষতি আপনারই। কিন্তু এর সমাধান কী? চাইলেই তো আর একাগ্র হওয়া যায় না! তার জন্য চেষ্টা করতে হয়। এক যাপন প্রশিক্ষক জানাচ্ছেন, কয়েকটি খুব সাধারণ বিষয় আগে থেকে খেয়াল রাখলে কাজে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না।
দিল্লিনিবাসী ওই যাপন প্রশিক্ষকের নাম রিতু সিঙ্গল। এক পডকাস্টে তিনি বলছেন, ‘‘যে কোনও কাজেই মনোনিবেশ করা বা সম্পূর্ণ একাগ্রচিত্ত হওয়া সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু কিছু পরিস্থিতি সেই কাজ আরও কঠিন করে তোলে। তাই কোনও কাজে মন দিতে হলে আগে ওই প্রতিকূল বিষয়গুলিকে দূরে রাখতে হবে।" সেগুলি কী কী?
১। মোবাইলের নোটিফিকেশনের আওয়াজ বন্ধ করা। সমাজমাধ্যমের অজস্র প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে অধিকাংশেরই। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। এ ছাড়াও বিভিন্ন অ্যাপ থেকেও নানা ধরনের নোটিফিকেশন আসতে থাকে মোবাইলে। নোটিফিকেশনের আওয়াজ শুনলেই কী এসেছে, তা দেখার ইচ্ছে হতে পারে। মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। তাই প্রথমেই সেই সমস্যা মিটিয়ে রাখা ভাল। যখন কাজ করতে বসছেন, তখন খুব জরুরি প্রয়োজনেরটি ছাড়া বাকি সমস্ত নোটিফিকেশন বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করুন।
২। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় বসে বিরতিহীন কাজ করাও ঠিক নয়। রিতু বলছেন, ‘‘এতে আপনি হয়তো ভাবছেন, বিরতি নিলেই মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। কিন্তু আদতে আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়বে। বেশি ক্ষণ মনোযোগ টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।"
৩। খালি পেটে পড়াশোনা বা কাজ, কোনওটিই ভাল ভাবে হয় না। খাবার শরীরকে শক্তি জোগায়। শক্তি যদি কম থাকে, তবে মাথাও কাজ করার বা কোনও একটি বিষয়ে মনঃসংযোগ করার মতো জোর পাবে না।
৪। শুধু মন দিয়ে কাজ করাই যথেষ্ট নয়। যে কোনও কাজ শেষ করার জন্য পরিকল্পনারও দরকার আছে। তাই আগে লক্ষ্য স্থির করুন। তার পরে কী ভাবে সেই লক্ষ্য পূরণ করবেন তার একটি পরিকল্পনা ছকে ফেলুন। যদি ৩টি কাজ শেষ করার থাকে, তবে প্রত্যেকটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা সময় নির্দিষ্ট করুন। তার মাঝে বিরতি এবং খাওয়াদাওয়ার জন্যও আলাদা সময় বেঁধে রাখুন। এতে সময়ে কাজ শেষ হবে।
৫। গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ ভাগ করতে হবে। আর তা করতে হবে কাজ শুরু করার আগেই। যদি ভেবে থাকেন, প্রতিটা কাজই গুরুত্বপূর্ণ, তবে আগেই মস্তিষ্কের কাছে বিষয়টি ভারী হয়ে উঠতে পারে বা ধন্দ তৈরি করতে পারে। তাতে মাথা আগেই হাল ছেড়ে দিতে পারে।
যাপন প্রশিক্ষকের পরামর্শ, কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়কে ছোট ছোট ভাগে ভেঙে নিন। কাজের ফাঁকে ছোট ছোট বিরতি নিন এবং স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া করলেই দেখবেন, মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন। তা সহজে কাজ থেকে মন বিচ্ছিন্ন হবে না।