মায়াবী চোখ। খানিক অযত্নলালিত রূপ। ঢিলেঢালা শার্ট বা সুতির হালকা শাড়ি আলগা পড়ে থাকে শরীরে। অবহেলায় যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী ইশা সাহা। কিন্তু তাঁর এই অবহেলা কি সচেতন, না কি অসচেতন? সাজ থেকে শুরু করে ত্বকচর্চা, রূপচর্চা খানিক অসচেতনই বটে। যাঁরা ইশার পথে হাঁটতে চান, তাঁদের জন্য উত্তর লুকিয়ে বঙ্গতনয়ার দিনলিপিতে। সাজ, রূপচর্চা অসচেতন হলেও যাপন নিয়ে উদাসীন নন ইশা। আর সেখানেই লুকিয়ে তাঁর সৌন্দর্য, ছিপছিপে চেহারার রহস্য।
দুর্গাপুজো এসেই গেল। ক'দিন পরেই সেজে উঠবে শহর-গ্রাম। তার আগে ইশার মতো এমন যত্নহীন সৌন্দর্য পেতে চান? কিন্তু ইশার বিশ্বাস, আলাদা করে পুজোর আগে যাপনে বদল এনে স্বাস্থ্যরক্ষা বা ত্বকচর্চা করা সম্ভব নয়। সারা বছরই যত্নবান হতে হবে খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার প্রতি। ইশার পরামর্শ, ‘‘তবে শুরু করতে হলে এখনই করতে হবে। তা হলে হয়তো পুজোর সময়ে একটু ঝরঝরে লাগতে পারে শরীর। আমি এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু আমি দেখেছি, নিজের ক্ষেত্রে অল্প একটু খাটলেই দ্রুত ফলাফল দেখতে পাই। তাই আমার কাছে সুস্থ থাকার মন্ত্র খুবই সরল, যা খেতে ইচ্ছে করছে, খেয়ে নাও, তার পর ব্যায়াম করে পুষিয়ে নিয়ে নাও। আমার মতো মেটাবলিজ়ম হলে আমার মতো দিন যাপন করতেই পারেন।’’
ইশা খাদ্যরসিক। তাই খাদ্যাভ্যাসকে কঠোর নিয়মে বাঁধেননি। সাদামাঠা, নীরস নয় তাঁর খাবারের থালা। তবে কোনও কিছুই মাত্রাতিরিক্ত নয়। জাঙ্ক ফুড খেলেও তার সীমা লঙ্ঘিত হয় না। আবার একই সঙ্গে, ডায়েট করলেও কৃচ্ছ্রসাধন করেন না। তবে জীবন থেকে চিনি প্রায় সম্পূর্ণ রূপেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন ইশা। চা-কফিতে চিনি মেশে না বহু দিন হয়ে গেল। কিন্তু মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে নিজেকে বাধা দেন, দাঁড়ান না অভিনেত্রী। আফসোসের অবকাশ নেই।
ইশার মতো এমন যত্নহীন সৌন্দর্য পেতে চান? ছবি: সংগৃহীত।
ইশার খাদ্যাভ্যাস মানে এক এক দিন এক এক রকম। রসনাতৃপ্তির প্রতি অনুগত নায়িকা। ইশার রোজের খাওয়াদাওয়ার যদি খসড়া বানানো যায়, তা হলে তা খানিক এমন—
প্রাতরাশ সাধারণত হালকাই থাকে। তবে খিদে বেশি পেলে বা দুপুরে খাওয়াদাওয়া দেরিতে হবে জানলে সে দিন একটু ভারী খাবার খেয়ে নেন। তবে কলার মতো একটি ফল থাকতেই হবে রোজ সকালে। সঙ্গে দু’টি ডিমের সাদা অংশ আর ১-২টি গোটা ডিম দিয়ে একটি অমলেট। কখনও বা চিঁড়ের পোলাও, তিনটি ডিমের সাদা অংশ। কখনও বা শুধু কলা আর প্রোটিন শেক।
তবে দুপুর খাবারের পাত ওজনে খানিক ভারীই বটে। ভাত, মাছ বা মাংস (প্রোটিনের যে কোনও উৎস), সঙ্গে ডাল এবং সব্জি থাকলেও থাকতে পারে। ভাজাভুজি খেতে ইচ্ছে করলে তা-ও থাকে পাতে। সেদ্ধ খাওয়ার শখ হলে তা-ও পূরণ করে নেন। ভর্তাও বেশ পছন্দ আমিষপ্রেমী ইশার।
সন্ধ্যায় হালকা খিদে বা চোখের খিদে পেলে মাখানা, মুড়ি-বাদাম, ঝালমুড়ি, চিজ়, কাজুবাদাম, ডার্ক চকোলেটের মতো ভাল ফ্যাট রাখেন ডায়েটে।
নৈশভোজে কোনও দিন চারটি ডিমের সাদা অংশ, একটি গোটা ডিম। সঙ্গে একটি শসা বা গাজর। কখনও বা শুধু প্রোটিন শেক খেয়ে নেন ইশা। তবে মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে দুপুরে খাওয়ার সময়ে খান। রাতে একেবারেই মিষ্টি বাদ। কারণ হাঁটাচলার পরিমাণ কমে যায় দিনের শেষে।
শরীরচর্চা নিয়ে অতিরিক্ত শৃঙ্খলার পক্ষপাতী নন ইশা। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন জিমে গিয়ে ব্যায়াম করেন। ইশার কথায়, ‘‘আমি যদি সারা বছর অল্প অল্প করে শরীরচর্চা করতেই থাকি, তা হলে কখনওই বাড়াবাড়ি করতে হয় না। আর যদি ৬ মাস টানা শরীর সক্রিয় না থাকে, তা হলে জিমে গিয়ে পরিশ্রমও বেড়ে যায়।’’