২০১২ সালে ছবির দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করার আগে প্রায় ৫০ কেজি ওজন কমাতে হয়েছিল অভিনেতা অর্জুন কপূরকে। এই যাত্রা ছিল দীর্ঘ চার বছরের। এই পথচলা সম্ভব হয়েছিল একমাত্র তাঁর মায়ের অবিচল সমর্থনের জন্য। মা মোনা শৌরী কপূর তাঁকে প্রতিটি ধাপে মনের জোর জুগিয়েছিলেন। কিন্তু সেই মা-ই তাঁর প্রথম ছবি দেখে যেতে পারেননি। সম্প্রতি স্বাস্থ্যসঙ্কট এবং ওজন ঝরানো নিয়ে কথা বললেন বনি কপূরের পুত্র।
মায়ের মৃত্যুর সময় তাঁর মাত্র পঁচিশ বছর বয়স। অর্জুনের কথায়, ‘‘মাত্র ২৫ বছর বয়সেই যদি কারও মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, সে কি আর পৃথিবীকে ভয় পায়? তখন যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম, তাতে টের পেয়ে গিয়েছিলাম যে, সামনে যা-ই আসুক, লড়ে যাব।’’ চার বছরের ওজন কমানোর লড়াই আসলে ছিল নিজের মনের সঙ্গে রোজের যুদ্ধ। তাই অভিনেতা নিজের অনুরাগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে চান।
মায়ের সঙ্গে অর্জুন কপূর। ছবি: সংগৃহীত।
গত বছর অর্জুন জানিয়েছিলেন, তাঁর ওজন বাড়ার নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল হাশিমোতো থাইরয়েডের। এই সমস্যা তাঁর বিপাকক্রিয়াকে ধীর করে দিত। একই রোগ ছিল তাঁর মায়ের এবং বোনেরও। ফলে নিজের শরীরকে বুঝে চলাই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
হাশিমোতো থাইরয়েড এক প্রকার অটোইমিউন ডিজ়অর্ডার। হাসিমোতো রোগে আক্রান্ত হলে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যায়, এই পরিস্থিতিকে হাইপোথাইরয়েডিজ়ম বলে। থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলে বিপাকক্রিয়ার গতিও কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে যায়, কারও ক্ষেত্রে আবার কমে যায়। শুধু ওজনেই নয়, এই রোগে আক্রান্ত হলে হার্ট ও মস্তিষ্কের উপরেও প্রভাব পড়ে।
আরও পড়ুন:
বহু দিন ধরে এই অসুখে ভুগলেও ৩০ বছর বয়সে রোগ শনাক্ত হয় তাঁর। এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য তাঁকে থেরাপিও করাতে হয়েছে। তবে ওজন কমানোর যাত্রা শুরু হয়েছিল আগেই, তাঁর মা বেঁচে থাকাকালীনই। অর্জুনের বার্তা, শরীরের পাশাপাশি মনের যত্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনুভূতি চাপা দিয়ে রাখা কখনওই শক্তি বা সাহসের পরিচয় নয়। সবচেয়ে শক্তিশালী তাঁরাই, যাঁরা নিজেদের ভেঙে পড়া, আবেগকে স্বীকার করতে পারেন এবং সেখান থেকেই নতুন করে দাঁড়াতে শেখেন।