ঘুম যেন ছাড়তেই চায় না। বিছানা ছেড়ে উঠতেই মন চায় না। আলস্য কাটিয়ে ওঠাই যাচ্ছে না? দিনভর ক্লান্তি চেপে বসছে? এমন সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকেই। নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। অথচ ঝিমুনি, ক্লান্ত শরীর। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমেই বদল আনুন কয়েকটি বিষয়ে।
ঘুম: দিনভর ঝিমুনির কারণ হতেই পারে ঘুমের ঘাটতি। দিনভর কাজের পর রাতে শোয়ার সময়ে মোবাইলে চোখ রাখেন? নিছক বিনোদনের খোঁজেই কাবার হয়ে যায় রাত? অথচ সকালে বেশি ক্ষণ ঘুমোনোর উপায় নেই। এক-আধ দিন এমনটা হতে পারে। তবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ এমন চলতে থাকলে শরীরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। ঘুম কম হলে বিপাকহার, হরমোনের ভারসাম্যে প্রভাব পড়ে। দিনভর ঝিমুনির কারণ এটিও হতে পারে। নিয়ম করে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।
জল: কাজের ফাঁকে নিয়ম করে জল খাওয়া হয় না? শরীরে তরল বা জলের ঘাটতিও কিন্তু ক্লান্তির কারণ হতে পারে। কারণ, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার জন্য জলের প্রয়োজন। শুধু যে জল থেকে সেই প্রয়োজন মেটে তা নয়, স্যুপ, ফল, তরল খাবার খেলেও চলে। কিন্তু নিয়মিত জল বা তরল খাবার কম খেলে কিংবা জলশূন্যতা ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
প্রাতরাশ: সকালের তাড়াহুড়োয় প্রাতরাশই বাদ পড়ে যায়? আবার দুপুরে ভরপেট খান? এমন অভ্যাসও ক্লান্তির নেপথ্য কারণ হতে পারে। রাতে খাওয়ার পর সকালের খাওয়ারের মাঝে সময়ের ব্যবধান থাকে অনেকটাই। সেই কারণে পেট ভরে প্রাতরাশ করতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। যে কোনও কিছু খেয়ে পেট ভরানো নয়, বরং কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবারের সঠিক সমন্বয়ই হতে পারে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। দৈনন্দিন কাজের শক্তি আসে উপযুক্ত পুষ্টি থেকেই।
শরীরচর্চা: ক্লান্ত শরীরে শরীরচর্চা? প্রশ্ন আসতেই পারে। তবে চিকিৎসক থেকে ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বলছেন, শরীরচর্চাতেই লুকিয়ে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। অন্তত মিনিট ১০-১৫ হাঁটলেও উপকার। হালকা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ় করতে পারেন মিনিট পনেরো সময় বার করে। শরীরচর্চায় শরীরে রক্তপ্রবাহ ভাল হয়, অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে। ঝিমুনি, ক্লান্তি কাটতে পারে নিয়মিত অভ্যাসে।
বিরতি: কাজের অত্যধিক চাপও শারীরিক ক্লান্তির কারণ হতে পারে। সে কারণেই বিশ্রাম এবং মাঝেমধ্যে বিরতি নেওয়া ভাল। অল্প কিছু ক্ষণের জন্য কাজ বাদ দিলেও ক্লান্তি কাটতে পারে। সম্ভব হলে, কর্মজগৎ থেকে দিন কয়েকের ছু’টি নিয়ে দেখতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। দিনভর ক্লান্তি পুষ্টির অভাবে হতে পারে, অসুখের জন্য বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্যও হতে পারে। অভ্যাস বদলেও ফল না মিললে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া দরকার।