সাধারণ নরম পানীয়, রঙিন মিষ্টি সোডায় না হয় চিনি আছে, কিন্তু ‘জিরো সুগার’ লেবেল সেঁটে যে সব তথাকথিত ডায়েট পানীয় বিক্রি হয়, তা থেকে ডায়াবিটিস হয় কী করে? সে প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানসার কাউন্সিল এবং দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কেউ যদি দিনে একটি করেও ডায়েট পানীয় খান, তা হলে তাঁর টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৩৮ শতাংশ বেড়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, এর থেকে ক্ষতির আশঙ্কা চিনি দেওয়া পানীয়ের চেয়েও অনেক বেশি।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ডায়াবিটিস অ্যান্ড মেটাবলিজ়ম’ নামের এক মেডিক্যাল জার্নালে। তাতে বলা হয়েছে, ওই গবেষণার জন্য ১৪ বছর ধরে নজর রাখা হয়েছিল ৩৬ হাজার অস্ট্রেলিয়াবাসীর উপর। খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস তো বটেই, শরীরে সেই খাবারের কী কী প্রভাব পড়ছে, দেখা হয়েছিল তা-ও। সেই সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেই গবেষকেরা জানিয়েছেন, চিনি দেওয়া নরম পানীয়ের থেকেও অনেক বেশি ক্ষতিকর কৃত্রিম ভাবে মিষ্টি বানানো ডায়েট পানীয়।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বারবোরা কুর্টেন জানিয়েছেন, ‘‘চিনি দেওয়া নরম পানীয় খেলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি আছে, এ কথা প্রায়ই বলা হয়। সে জন্য অনেকে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসাবে ডায়েট সোডা খেয়ে থাকেন। কিন্তু সেটা যে একেবারেই নিরাপদ নয়, তার প্রমাণ পাওয়া গেল গবেষণায়।’’ যে ৩৬ হাজার অস্ট্রেলিয়াবাসীর স্বাস্থ্যের উপর এ জন্য নজর রাখা হয়েছিল, দেখা গিয়েছে ডায়েট সোডা খেয়ে তাঁদের ওজন তো বেড়েইছে, পাশপাশি ক্ষতি হয়েছে বিপাকের হারেও। যেহেতু বিপাকের হার শরীরে যাওয়া শর্করা ভাঙতেও কার্যকরী, তাই তা সরাসরি ডায়াবিটিসের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
গবেষকেরা বলছেন, দুনিয়া জুড়ে চিনি দেওয়া নরম পানীয়ের উপর ট্যাক্স বসানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এই ডায়েট সোডা নিয়ন্ত্রণেও ততটাই কড়া নীতি নেওয়া উচিত।