Advertisement
E-Paper

অসুখ-বিসুখ ঠেকিয়ে রাখবে, হার্টও ভাল থাকবে, ঝোলে-ঝালে নয়, কী ভাবে খেতে হবে সুস্বাদু ইলিশ?

যখন-তখন বৃষ্টি, প্যাচপেচে কাদা যদি বর্ষার বিরক্তির কারণ হয়, তা হলে এই ঋতুকে ভালবাসার কারণ হতে পারে ইলিশ। এই মাছের স্বাদ অনবদ্য। উপকারিতাও কম নয়। কিন্তু কী ভাবে খেলে মিলবে এর পুষ্টিগুণ?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ০৯:০২
ছোট ছোট আঁশের রূপোলিরঙা ইলিশের খ্যাতি তার স্বাদের জন্যই।

ছোট ছোট আঁশের রূপোলিরঙা ইলিশের খ্যাতি তার স্বাদের জন্যই। —ফাইল চিত্র।

ঝোলে-ঝালে-অম্বলে ইলিশ তুলনাহীন। মুচমুচে ভাজা আর গরম ভাতে ইলিশের তেলও জিভে জল আনার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু স্বাদের কথা মাথায় রাখলে কি বজায় থাকে স্বাস্থ্য?

ছোট ছোট আঁশের রূপোলিরঙা ইলিশের খ্যাতি তার স্বাদের জন্যই। এই মাছের গন্ধ এবং স্বাদ এতটাই যে, তা দিয়ে কালে কালে তৈরি হয়েছে নানা পদ। তবে শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এই মাছের জুড়ি মেলা ভার, বলছেন পুষ্টিবিদেরাই।

ইলিশের গুণাগুণ

১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে ক্যালোরির পরিমাণ ৩১০-৩৩০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিন ২১-২৩ গ্রাম। ফ্যাট ২২-২৫ গ্রাম। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড মেলে ২-২.৫ গ্রাম। কোলেস্টেরল ৭০-৮০ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ২৫০-৩০০ মিলিগ্রাম, আয়রন ১-১.৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৫০-৩০০ মিলিগ্রাম। এ ছাড়াও এই মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি, মাঝারি মাত্রায় ভিটামিন এ।

এত পুষ্টিগুণ যে মাছের, সেটি যে স্বাস্থ্য ভাল রাখবে, তাতে আর সংশয় কী!

পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘ইলিশ মাছে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালশিয়াম-সহ বেশ কিছু খনিজ। অবশ্যই এই মাছ শরীরের পক্ষে উপকারী। হার্ট এবং মস্তিষ্ক ভাল রাখতে সাহায্য করে মাছটি।’’ পুষ্টিবিদ শম্পা জানাচ্ছেন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার জন্যই এই মাছ পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভাল রাখে।

ভাল রাখে হার্ট: ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। অন্য দিকে, প্রচুর মাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা ট্রাইগ্লিসারয়েড এবং রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ‌্‌যন্ত্রও সুস্থ থাকে।

হাড়, পেশি মজবুত রাখে: ইলিশে ভাল মাত্রায় মেলে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়াম। যা হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। আবার এতে থাকা ভাল মানের প্রোটিন পেশি সবল রাখার জন্যও জরুরি। ইলিশে মেলে ভিটামিন এ। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে এই ভিটামিনেরও ভূমিকা থাকে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছ খেলে বয়সকালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে এতে থাকা ডিএইচএ। অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখ প্রতিরোধেও এই মাছ কার্যকর।

ইলিশে ভাল মাত্রায় মেলে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়াম।

ইলিশে ভাল মাত্রায় মেলে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়াম। —প্রতীকী চিত্র।

ঝোলে-ঝালে-অম্বলে খেলেই কি মিলবে পুষ্টিগুণ?

গরম ভাতে ইলিশের তেল ঢেলে মুচমুচে ভাজা খাচ্ছেন? কিংবা সর্ষেবাটা, সর্ষের তেল দিয়ে জমিয়ে রাঁধা ঝাল, অম্বল? তবে অনন্যা বলছেন, পুষ্টিগুণ পেতে হলে কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রায় কড়া করে মাছ ভাজা যাবে না। এতে মাছের গুণাগুণ নষ্ট হবে। তা ছাড়া এই মাছে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট এবং তেল থাকার জন্য কারও কারও ইলিশ খেলেই অম্বল হয়। লঙ্কা, সর্ষে বাটা দিয়ে ঝাল বা ঝোল সেই সমস্যায় ইন্ধন জোগাতে পারে। বরং এর স্বাস্থ্যগুণ পেতে হলে অল্প তেল-মশলায় মাছটি কম আঁচে ভাপিয়ে খাওয়া ভাল। মাছের সঙ্গে সব্জি, ভাত দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

সকলের জন্যই কি ভাল এই মাছ? কতটাই বা খাবেন?

উপকারী বলেই নিয়মিত ৩-৪ পিস ইলিশ খাওয়া যায় না, বলছেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। বরং সপ্তাহে এক বা দু’দিন ১ থেকে ২ পিস ইলিশ মাছ খাওয়া যেতে পারে। লিভার-কিডনির বা বিশেষ কোনও সমস্যা থাকলেও ইলিশ মাছ খাওয়া বারণ হতে পারে। খেতে হলেও চিকিৎসকের সম্মতি নেওয়া জরুরি।

তবে সকলের জন্যই এই মাছ ভাল নয়। এতে ফ্যাটের মাত্রা বেশি। ফলে ওজন কমাতে চাইলে এই মাছ মেপে খাওয়া দরকার। যাঁদের ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া বারণ, তাঁদের ক্ষেত্রে এই মাছ বেশি চলবে না। কোলেস্টেরল খুব বেশি থাকলেও ইলিশ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া দরকার।

Hilsa Recipe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy