Advertisement
E-Paper

প্রাতরাশ থেকে নৈশভোজ, সব খাবারেই জুড়ছে প্রোটিন? নিঃশব্দেই ক্ষতি হচ্ছে কি কিডনির?

ওজন ঝরাতে প্রোটিন খাচ্ছেন নানা ভাবে? প্রয়োজনের বেশি প্রোটিন নিঃশব্দেই কিডনির আয়ু কমিয়ে দিতে পারে। কী ভাবে হতে পারে বিপদ?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:০২
কিডনি নষ্ট হওয়ার পিছনে কোন কারণ দায়ী হতে পারে?

কিডনি নষ্ট হওয়ার পিছনে কোন কারণ দায়ী হতে পারে? —প্রতীকী চিত্র।

ওজন নিয়ন্ত্র‌ণে রাখতে হবে, শরীরে বল চাই— সব সমস্যার সমাধান লুকিয়ে প্রোটিনে। অন্তত সমাজমাধ্যমে হাল আমলে পুষ্টি নিয়ে আলাপ-আলোচনায় এমনটাই উঠে আসছে। প্রাতরাশ থেকে মধ্যাহ্নভোজ এবং সান্ধ্য স্ন্যাক্সেও কী ভাবে প্রোটিন জুড়ে দেওয়া যায় চর্চা তা নিয়ে।

দ্রুত মেদ ঝরাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাই-প্রোটিন ডায়েট করেন অনেকেই। পুষ্টিবিদ, ফিটনেস প্রশিক্ষকদের নজরদারিতে নিয়ম মেনে সে-সব করলে ঠিক আছে। তবে শুধুমাত্র গুণাগুণের দিকে চোখ রেখে সব খাবারেই প্রোটিন জুড়লে বিপদ ঘটতে পারে নিঃশব্দে। বিগড়ে যেতে পারে কিডনির স্বাস্থ্য।

কিডনিকে কী ভাবে প্রভাবিত করে হাই প্রোটিন ডায়েট?

কিডনি শরীরের ছাঁকনির মতো করে। রক্ত পরিশোধনে, শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করতে সাহায্য করে প্রত্যঙ্গটি। শরীরে ইলক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষাতেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কেউ প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়া শুরু করলে কিডনির উপরেও চাপ পড়ে। প্রোটিন জাতীয় খাবার বিপাকের ফলে তৈরি হওয়া ইউরিয়ার মতো নাইট্রোজ়েনাস বর্জ্য শরীর থেকে বার করে দেওয়ার কাজটি ক্রমাগত করে চলতে হয় কিডনিকে।তা থেকেই ধীরে ধীরে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।

প্রোটিন কখন সমস্যার কারণ?

অতিরিক্ত প্রোটিন দিনের পর দিন খাওয়া হলে নানা রকম ভাবে শরীরে প্রভাব পড়ে। আমেরিকান সোসাইটি অফ নেফ্রোলজির ২০২০ সালে প্রকাশিত গবেষণালব্ধ তথ্যে প্রকাশ, হাই-প্রোটিন ডায়েট কিডনির ফিল্টার বা ছাঁকার প্রক্রিয়ায় বাড়তি চাপ তৈরি করে, ‘ইন্ট্রাগ্লোমেরুলার প্রেসার’ বাড়িয়ে দেয়। কিডনিতে ‘গ্লোমেরুলি’ নামে ক্ষুদ্র ফিল্টার বা ছাঁকনি থাকে, যা রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ ছাঁকতে সাহায্য করে। সেই ছাঁকনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে ক্রমাগত হাই-প্রোটিন ডায়েট করলে। তা থেকেই ধীরে ধীরে বিকল হয়ে পড়তে পারে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গটি।

অতিরিক্ত প্রোটিন নির্ভর ডায়েটের আর একটি বিপজ্জনক দিক হল জলশূন্যতা। প্রোটিন বিপাকের ফলে ইউরিয়া তৈরি হয়। সেই ইউরিয়া শরীর থেকে বার করে দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জলের প্রয়োজন হয়। ঠিকমতো জল বা তরল খাবার না খেলে, তা শরীরে জমতে পারে। তা ছাড়া শরীরচর্চায় ঘাম ঝরলেও, বাড়তি জলের প্রয়োজন হয়। এক দিকে শরীরচর্চা, অতিরিক্ত প্রোটিন নির্ভর ডায়েট, অন্য দিকে, জলের অভাব সমস্যা তৈরি করে। এই নিয়ে একাধিক সমীক্ষা, গবেষণাও হয়েছে। এমনই একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ১২ সপ্তাহ অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে কিডনির উপর চাপ বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে। বিশেষত ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন বা কিডনির সমস্যার ইতিহাস রয়েছে, এমন কারও জন্য তা আরও ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

‘ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন’-এর পরামর্শ ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশনের সমস্যা থাকলে প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। প্রোটিন জরুরি তবে মাত্রাতিরিক্ত নয়। কোনও মানুষের শরীরের ওজন যত, ওজন প্রতি ০.৮ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া যেতে পারে। তার বেশি নয়।

পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রোটিন শরীরের শত্রু নয়। তবে তার গুণাগুণ পেতে হলে, নিয়ম জেনে, মেনে সঠিক খাবার বাছাই করতে হবে। সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো দেখে বা এর-ওর কথা শুনে প্রোটিন শেক থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে শুধু প্রোটিন খেলে হিতে-বিপরীত হতে পারে।

Tips Health awareness kidney Protein
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy