দ্রুত মেদ ঝরাতে হলে শর্করায় রাশ টানতে হবে— এ কথা এ যুগে অল্পবিস্তর সকলেই বুঝে গিয়েছেন। কিন্তু এ-ও ঠিক যে, দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরাতে হলে শুধু প্রোটিনে কাজ হবে না। ধরুন, সকাল সকাল তিনটি সেদ্ধ ডিম খেলেন, তাতে পেট ভরা থাকবে বড়জোর দু’ঘণ্টা, তার পরেই আবার চাগাড় দেবে খিদে। ফলে খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। তা হলে প্রাতরাশে কী এমন খাবেন, যাতে প্রোটিনের অভাব পূরণের পাশাপাশি পেটও ভরা থাকবে?
এ ব্যাপারে মেডিটেরেনিয়ান অর্থাৎ ভূমধ্যসাগর লাগোয়া দেশগুলির একটি রন্ধনপ্রণালী অনুসরণ করা যেতে পারে। তুরস্ক, গ্রিস, স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স এবং মিশরের মতো ভূমধ্যসাগরের উপকূল লাগোয়া দেশগুলিতে প্রাতরাশে ডিম দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়ার চল বেশি। আর ওই সমস্ত দেশে প্রাতরাশে ভারী খাবারও খাওয়া হয়। প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরপুর ডিমের নানা রকম রান্না খাওয়ার চল আছে সেখানে। রোগা হতে চাইলে তেমনই এক রান্না রাখতে পারেন প্রাতরাশে। যা শরীরের সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেবে তো বটেই, পেটও ভরিয়ে রাখবে। আর এমন রান্না করতে সময় লাগবে বড় জোর ১৫ মিনিট।
কী কী লাগবে?
৩টি ডিম, ২ টেবিলচামচ অলিভ অয়েল, আনসল্টেড বাটার, মাঝারি মাপের পেঁয়াজ অর্ধেক কুচিয়ে নেওয়া, ১ টেবিল চামচ রসুনকুচি, আধ কাপ পালংশাক, সেদ্ধ করা মুরগির মাংস ২ টুকরো, আধ কাপ মাশরুম কুচোনো, নুন, মরিচ, চিলিফ্লেক্স এবং অরিগ্যানো।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে বানাবেন?
গরম জলে নুন দিয়ে পালং শাক ভাপিয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিন। তার পরে প্যানে সামান্য মাখন ও রসুনকুচি দিয়ে পালংশাক হালকা নেড়ে নিয়ে তুলে নিন। ওই তেলেই কুচোনো পেঁয়াজ এবং সেদ্ধ করা মাংসের টুকরো ছোট ছোট করে কেটে দিয়ে দিন। হালকা ভেজে তুলুন। ভেজে নিন মাশরুমও।
এ বার বাকি তেল প্যানে হালকা গরম হতে দিয়ে ডিম ফেটিয়ে নিন। অল্প নুন আর মরিচ মিশিয়ে প্যানে ঢেলে দিন। ধীরে ধীরে কাঁচা ভাব কাটতে শুরু করলে একটি চামচে করে অল্প অল্প নেড়ে দিয়ে আবার রান্না হতে দিন মিনিট খানেকের জন্য।
এর পরে আগে থেকে রান্না করে নেওয়া পালংশাক, পেঁয়াজ, চিকেনের টুকরো, মাশরুমের টুকরো ভিতরে সাজিয়ে দিন। উপরে ছড়িয়ে দিন চিলিফ্লেক্স এবং অরিগ্যানো। তার পরে ডিমের পরতটি মাঝ বরাবর মুড়ে তুলে নিন।
কেন এটি পুষ্টিকর?
১। পালংশাকে রয়েছে জরুরি নানা ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার। যা একাধারে পেশির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় অনেক সময়েই পেশির ঘনত্ব হ্রাস পায়। যে কারণে ডায়েটের পাশাপাশি পেশির স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য শরীরচর্চাও করতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। পালংশাক পেশির ঘনত্ব কমতে দেয় না। ফলে শরীরও দ্রুত বুড়িয়ে যায় না।
২। ডিমে ভিটামিন ডি রয়েছে। মাশরুমেও রয়েছে ভিটামিন ডি। সার্বিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য এই ভিটামিন দরকারি। পেশির জোর থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য এমনকি, স্নায়ুর সমস্যাও দূরে রাখতে পারে এই ভিটামিন।
৩। মুরগির মাংস হল লিন প্রোটিন। যা পেটও ভরিয়ে রাখে দীর্ঘ ক্ষণ। তাই ওমলেটের সঙ্গে কয়েক টুকরো চিকেন খেলে তা যেমন খাবারে প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করবে, তেমনই তা পেটও ভরিয়ে রাখবে। যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক।