কম বয়সের ছবি দেখে আক্ষেপ হয়? সেই নির্মেদ চেহারা, ফিটনেস এখন কোথায়! বরং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কোমরে, তলপেটে মেদের পরত, দু’পা হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাওয়াই যেন দস্তুর।
এক সময়ে রীতিমতো শরীরচর্চা করা মহিলা-পুরুষেরাও অফিস, সংসার ঠেলতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে যান। আলাদা করে ব্যায়াম, শরীরচর্চার সময়ই থাকে না। কিন্তু একটা সময়ের পরে যদি মনে হয়, আবার শুরু করা দরকার, তখন কী করা যায়?
তারকাদের পুষ্টিবিদ হিসাবে পরিচিত রুজুতা দিবেকর। খাওয়াদাওয়া এবং সুস্থ থাকার নানা রকম পরামর্শ দেন তিনি সমাজমাধ্যমে। রুজুতা অনুপ্রাণিত তাঁরই পড়শিকে দেখে।
পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই বয়সেই নতুন করে শরীরচর্চা শুরু করেছেন তিনি। দুই সন্তান রয়েছে তাঁর। স্বামী, বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়ির দেখাশোনা করতে হয়। সংসারের ঝক্কি সামলে নিজের দিকে তাকানোর ফুরসত মেলে না। সেই তিনিই হঠাৎ এক দিন ট্রেডমিলে হাঁটা দিয়ে নতুন করে শরীরচর্চা শুরু করেন। তিনি রুজুতাকে বলেছিলেন যে, নানা কারণে তাঁর শরীরচর্চা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সে জন্য আক্ষেপ নেই। তবে নতুন করে শুরু করতে চান। সুতরাং যখন দরকার মনে হবে, আবার কিছু করতে ইচ্ছা হবে, তখনই নতুন করে শুরু করা যায়। রুজুতাও মনে করেন, এটাই সঠিক ভাবনা। নতুন করে শুরুর কোনও বয়স হয় না।
কিন্তু অনেক দিন পর শরীরচর্চা শুরু করতে হলে কোন নিয়ম মানা দরকার? কলকাতার ফিটনেস প্রশিক্ষক অনিকেত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ তরুণ প্রজন্ম থেকে বয়স্ক— অনেকেই নতুন করে শুরু করেন। তবে অভ্যাস না থাকলে আচমকা শরীরচর্চা করতে গেলে ব্যথা হওয়ার, মাংসপেশিতে চোট লাগার আশঙ্কা থাকতে পারে। তাই কিছু নিয়ম মানা জরুরি।’’
বাড়িতেই কেউ শরীরচর্চা করতে চাইলে
· শুরুতে জগিং, হালকা ব্যায়াম জরুরি। প্রথমেই দরকার ওয়ার্মআপ। যাতে শরীর, মাংসেপশির তাপমাত্রা বাড়ে। কারণ ওয়ার্ম আপ না করে ব্যায়াম করতে গেলে কেউ পেশিতে চোট পেতে পারেন।
· প্রথম ৩-৪ দিন বড় জোর ২০-২৫ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত। কারণ, শরীরকেও সওয়াতে হবে। না হলে গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে শরীরচর্চায় আবার ছেদ পড়বে।
· শুরুতে ১-২কেজি ওজন নিয়ে ব্যায়াম করাই যায়। তবে প্রশিক্ষকের নির্দেশ মেনে। উপযুক্ত কৌশল না জেনে, বাড়িতে একা করতে গেলে হিতে-বিপরীত হতে পারে।
· ৩-৪ দিন ২০ মিনিট ব্যায়াম করার পরে ধীরে ধীরে সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। শুরুতে কোনও ব্যায়াম ১ বা ২ সেট করা ভাল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়ানো দরকার।
· শরীরচর্চার শুরুটা করা দরকার ডায়নামিক স্ট্রেচিং দিয়ে। এতে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। পেশির সঙ্কোচন এবং প্রসারণের ফলে রক্তচলাচল ভাল হয়। শরীরচর্চার শেষ ধাপে জরুরি স্ট্যাটিক স্ট্রেচিং। এটি শরীরের তাপমাত্রা আবার আগের অবস্থায় আনতে সাহায্য করে, শরীর ঠান্ডা করে।