যাতায়াতে সময় যায় অনেক। সেটুকুকেই ব্যবহার করা হবে শরীরচর্চার জন্য।
মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন মানেই দমবন্ধ করা ভিড়। ভারতীয় রেলের রোজের যাত্রীর প্রায় ৪০ শতাংশই মুম্বই সাবার্বান রেলওয়ের যাত্রী। রোজ প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চড়েন সেখানে। আর তাঁদের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্যই উদ্যোগী হলেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার রুচিতা শাহ।
চলন্ত ট্রেনে মুম্বইয়ের যোগাসনের ক্লাস শুরু হয়েছে গত মার্চ মাস থেকে। চলবে আগামী ২১ জুন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পর্যন্ত। ১০০ দিনের এই প্রশিক্ষণ চর্চার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লোকাল ট্রেনকে, যে বাহনে রোজ এত মানুষ যাতায়াত করেন। প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা চলন্ত ট্রেনের দুলুনিতে সময় কাটে। এ বার সেই সময়টিকেই ব্যবহার করা হচ্ছে নিজের শরীর ও মনের প্রতি যত্ন নেওয়ার জন্য। যখন যাত্রীরা কেউ কেউ ফোনের মধ্যে ঘাড় গুঁজে থাকেন, কেউ বা খবরের কাগজ পড়েন, কেউ বা একঘেয়েমি কাটাতে ঘুমিয়ে নেন, সেই সময়টাকে শরীরচর্চার কাজে ব্যবহার করার জন্যই এই উদ্যোগ।
আরও পড়ুন:
দিনের যে সময়ে লোকাল ট্রেনে ভিড় খানিক কম থাকে, ঠিক তখন দু’জন প্রশিক্ষক তাঁদের নিকটস্থ স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনের ছন্দের সঙ্গে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের ছন্দ মিলিয়ে ‘মাইন্ডফুলনেস’ অনুশীলন চলে। পাশাপাশি, বিভন্ন হস্তমুদ্রাসন, স্ট্রেচ করা, মাইক্রো-মেডিটেশনও শেখানো হয়। প্রবীণ যাত্রীরা এতই উৎসাহী হয়ে উঠেছেন যে, নিজেরা শিখে নিয়ে অন্যদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছেন। এক থেকে দুই, দুই থেকে বহুজনের মধ্যে এই অভ্যাস সঞ্চারিত হয়ে গেলেই প্রশিক্ষকেরা সফল।
যোগের জন্য মাদুর এবং জায়গা যে অপরিহার্য নয়, সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন প্রশিক্ষকেরা। এক জন যাত্রী একটি ট্রেনে ঠিক যতটুকু জায়গা দখল করে থাকেন, ঠিক ততটুকুই দরকার যোগাভ্যাসের জন্য।
আগামী ২১ জুন কুস্তিবিদ সংগ্রাম সিংহ প্রশিক্ষকদের সঙ্গে ট্রেনে ট্রেনে যোগ শেখাবেন। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে ট্রেনগুলি হয়ে উঠবে চলন্ত যোগ কেন্দ্র। আশা, ধীরে ধীরে যাত্রীরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে এর পর থেকে অন্যদের সঙ্গে যোগ অভ্যাস করতে করতে কাজে যাবেন, কাজ থেকে আবার বাড়ি ফিরবেন।