Advertisement
E-Paper

‘ব্রাঞ্চ’ কী? এই পন্থায় খাবার খেলে দ্রুত ওজন ঝরে? শরীরের ক্ষতি হয় না তো?

আলাদা করে সকালের জলখাবার অর্থাৎ ‘ব্রেকফাস্ট’, এবং মধ্যাহ্নভোজ অর্থাৎ ‘লাঞ্চ’ না খেয়ে, দু’য়ে মিলে ‘ব্রাঞ্চ’ খাওয়ার বিদেশি চল এখন এ দেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০০
ব্রেকফাস্ট না করে ‘ব্রাঞ্চ’ খেলে শরীরের উপকার হয়?

ব্রেকফাস্ট না করে ‘ব্রাঞ্চ’ খেলে শরীরের উপকার হয়? ছবি: সংগৃহীত।

সকালে ঘুম থেকে উঠতে প্রায় দিনই দেরি হয়। বেরোনোর আগে বিশেষ কিছু খাওয়ার সময় থাকে না। বলতে গেলে খালি পেটেই ছুটতে হয় অফিসের পথে। সেখানে পৌঁছেও যে খেতে পারেন, এমনটা নয়। বেলা গড়িয়ে ঘড়ির কাঁটা যখন প্রায় ১টার কাছাকাছি, তখন পেটের ভিতর থাকা ‘ছুঁচোটি’ এমন ডন দিতে শুরু করে যে, না খেয়ে আর উপায় থাকে না। তখন গিয়ে একসঙ্গে অনেকটা খাবার খেয়ে ফেলেন। খাবার খাওয়ার বিশেষ এই পন্থাকে অনেকেই ‘ব্রাঞ্চ’ নামে চেনেন।

আলাদা করে সকালের জলখাবার অর্থাৎ ‘ব্রেকফাস্ট’, এবং মধ্যাহ্নভোজ অর্থাৎ ‘লাঞ্চ’ না খেয়ে, দু’য়ে মিলে ‘ব্রাঞ্চ’ খাওয়ার বিদেশি চল এখন এ দেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাতে শরীরের আদৌ ভাল হচ্ছে কি? এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক চিকিৎসক অনন্যা ভৌমিকের মত, “গোটা ব্যাপারটাই নির্ভর করছে অভ্যাসের উপর। শরীরকে যে কোনও একটি অভ্যাসে থিতু করতে হবে। অনেকেই আছেন যাঁরা নিয়ম করে প্রতি দিন সকালের জলখাবার খান। আবার সময়মতো লাঞ্চও করেন। আবার, এই ভাবে দীর্ঘ দিন ব্রাঞ্চ খেতেই অভ্যস্ত, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তাতে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

ওই যে একটা প্রবাদ আছে না, ‘শরীরের নাম মহাশয়, যা সহাবে তা-ই সয়’। শুরুর দিকে একটু অসুবিধে হলেও শরীর ধীরে ধীরে এই অভ্যাসে ধাতস্থ হয়ে পড়ে। তবে অনন্যা বলেন, “কিন্তু হঠাৎ কারও কথা শুনে যদি মনে হয় সপ্তাহে তিন দিন ব্রাঞ্চ করবেন, সে ক্ষেত্রে মেটাবলিজ়ম অর্থাৎ বিপাকক্রিয়া কিন্তু ঘাবড়ে যাবে। হঠাৎ নিয়মের এই পরিবর্তন শরীর চট করে বুঝতে পারবে না। তাতে উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।”

‘এন্ডোক্রাইন সোসাইটিজ় জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজ়ি অ্যান্ড মেটাবলিজ়ম’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, রাজকীয় ভাবে রাতের খাবার না খেয়ে সকালের জলখাবার যদি তেমন ভাবে খাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে স্থূলত্ব, রক্তে শর্করার বেড়ে যাওয়ার ভয় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে ইদানীং দ্রুত ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অনেকেই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ করেন। এই ডায়েট-পন্থায় যে ভাবে খাবার খাওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়, সেই হিসাব করলে ব্রেকফাস্ট বা সকালের জলখাবার বাদ পড়ারই কথা। দীর্ঘ দিন এমনটা চলতে থাকলে তা শরীরের উপর কোনও না কোনও ভাবে খারাপ প্রভাব ফেলবে। এই পন্থা কোনও অর্থেই স্বাস্থ্যকর হতে পারে না বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ পম্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সকালের জলখাবার বাদ দিয়ে আদর্শ ডায়েট হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এই পন্থায় দ্রুত ওজন ঝরে ঠিকই, তবে এটি নির্ভরযোগ্য নয়। আমার মতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর, ক্যালোরি ব্যালান্স করে খাবার খেলেই সব দিক বজায় থাকবে।”

সকালে জলখাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন?

ঘুমের সময়ে শরীর ‘রেস্টিং মোড’-এ চলে যায়। কিন্তু ভিতরে নিরন্তর শারীরবৃত্তীয় কাজগুলি চলতে থাকে। সেই কাজ করার জন্য শক্তি প্রয়োজন। সারা দিন ধরে শরীর যে গ্লুকোজ় সঞ্চয় করে রাখে, তা থেকেই এই প্রক্রিয়াটি সচল রাখা সম্ভব হয়। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সেই ঘাটতি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পূরণ করে দিতে হয়। না হলে সারা দিন কাজ করার মতো শক্তি পাওয়া যাবে না। তার সঙ্গে সময়ের দিকেও বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া জরুরি। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ঘুম থেকে ওঠার পর ৩০ মিনিট থেকে দু’ঘণ্টার মধ্যে সকালের জলখাবার খেয়ে নেওয়া উচিত। বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখতে সারা দিনে প্রতিটি খাবার খাওয়ার সময়ের মধ্যে যেন অন্ততপক্ষে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ব্যবধান থাকে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

Brunch Weight Loss Myths Skipping Breakfast
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy