সামগ্রিক স্বাস্থ্যের সূচনা নাকি মুখ থেকেই। ঠোঁটের ঠিক পিছন থেকে শুরু করে, দাঁত, মাড়ি, জিভ, মূর্ধা, এ সবের যত্ন নেওয়াকেই বলে ওরাল হাইজিন বা মুখের ভিতরের স্বাস্থ্যবিধি। আর জানা যাচ্ছে, এই ধাপ থেকেই সতর্ক না হলে প্রভাব পড়ে সোজা হৃৎপিণ্ডে। মাড়ির রোগ এবং মুখের সংক্রমণ প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া রক্তে প্রবেশ করতে পারে, এমনকি হার্টের টিস্যুতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। কখনও সখনও প্রাণঘাতী রোগও তৈরি করতে পারে।
মুখের ভিতরের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকের। ছবি: সংগৃহীত।
সঠিক ভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অনেক দিন ধরে প্লাক জমে জমে, মাড়ির রোগ তৈরি হতে পারে। এই রোগের নাম, পেরিয়োডোন্টাইটিস। সময় মতো চিকিৎসা না করালে, প্লাক মাড়ির টিস্যুর ক্ষতি করে। ফলে খুব সহজে মুখের ব্যাক্টেরিয়া রক্তে প্রবেশ করতে পারে। রক্তপ্রবাহে প্রবেশের পর, কিছু ব্যাক্টেরিয়া রক্তনালির ভিতরের স্তরে, এন্ডোথেলিয়ামের সঙ্গে জুড়ে যায়। এর ফলে সংক্রমণ ঘটে এবং সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। হৃদ্রোগ চিকিৎসক উদয়শঙ্কর দাস বললেন, ‘‘মুখের রোগসৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া হার্টের ধমনীতে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে প্রদাহ, সংক্রমণ, অ্যাথিয়োক্লেরোসিস (হার্টের আর্টারির দেওয়ালে চর্বি জমে যাওয়া) এবং অন্যান্য হার্টের অসুখ হতে পারে।’’
আরও পড়ুন:
দন্ত্যচিকিৎসক নীলর্মি কর্মকারও এই তত্ত্বের সঙ্গে সহমত। তিনি বললেন, ‘‘মাড়িতে সংক্রমণকারী, জিঞ্জিভাইটিস এবং পেরিয়োডোন্টাইটিস সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া শরীরের অন্যান্য জায়গায়, এমনকি রক্তনালিতেও চলে যায়। সেখানে প্রদাহ সৃষ্টি করে ও ক্ষতি করে। আর রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ফলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হতে পারে। রক্তনালিতে মুখের ব্যাক্টেরিয়ার অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছিল একটি গবেষণায়।’’
দুই চিকিৎসকই তাই মুখের ভিতরের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতন হতে বলছেন। ঠিক ভাবে ব্রাশ করা থেকে শুরু করে, মাউথ ওয়াশ ব্যবহার, সমস্যা দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ইত্যাদি মেনে চলতে হবে।