‘টেক্সট নেক সিনড্রোম’ কী? ছবি: শাটারস্টক।
চোখ খুলতেই ‘গুড মর্নিং মেসেজ’ দেখে অনেকেরই ঘুম ভাঙে। তার পর সকালের চা খেতে খেতে দেশ-দুনিয়ার খরবাখবর জানতে মোবাইলের পর্দায় নজর, তার পর সমাজমাধ্যমে নতুন কী হচ্ছে সেই সব বিষয়ে চোখ বুলিয়ে না নিলেই নয়! অফিসে ঢুকে সেই যে ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের সামনে মুখ গুঁজে বসলেন, ঘণ্টা দশের আগে রেহাই পাওয়া মুশকিল। তার মাঝেও মোবাইলে মেল, হোয়াট্সঅ্যাপে মেসেজ দেখাদেখি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাড় গুঁজে ফোনে কাজ করলে মেরুদণ্ডের মারাত্মক ক্ষতি হয়। সে বিষয় বার বার সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরাও। এই অভ্যাসের কারণে ঘাড়ের পেশি শক্ত হয়ে যায়, ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে। সেই ব্যথা ঘাড়, কাঁধ থেকে ছড়িয়ে পরে কোমরেও। কখনও কখনও এই কারণে ঘাড় থেকে কোমর পর্যন্ত পিন ফোটার মতো যন্ত্রণা শুরু হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই সমস্যার নাম ‘টেক্সট নেক সিনড্রম’।
চিকিৎসকদের কাছে যে রোগীরা যান, তাঁদের অধিকাংশই পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা কিংবা হাতের ব্যথায় ভুগছেন। চিকিৎসকদের আশঙ্কা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারই এই সমস্যার মূলে। দিনের অনেকটা সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে হাতের পেশি এবং লিগামেন্টের উপর চাপ পড়ে। দীর্ঘ দিন এমনটা হতে থাকলে সেই ব্যথা মেরুদণ্ডের উপরেও প্রভাব ফেলে। মেরুদণ্ড বেঁকেও যেতে পারে। অনেকেই আবার এই উপসর্গগুলিকে বাতের ব্যথার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে কী কী সতর্কতা নিতে হবে?
১) মোবাইলে মেসেজ করার পরিমাণ কমাতে হবে। প্রয়োজনে ফোনে কথা বলুন।
২) মোবাইল কেনার সময়ে লক্ষ রাখবেন মোবাইলটি যেন খুব ভারী না হয়। ভারী মোবাইল হাতে থাকলে পেশির উপর বেশি চাপ পড়ে। তাই কেনার আগে মোবাইলের ক্যামেরা, মেমোরির পাশাপাশি, গ্যাজেটের ওজনের দিকেও নজর রাখতে হবে।
৩) একটি মোবাইল স্ট্যান্ড কিনতে পারেন। তার উপর মোবাইলটি রেখে ব্যবহার করলে সমস্যা কম হবে।
৪) ফোন ব্যবহারের সময়ে ঘাড় নিচু বা বাঁকা করে না তাকিয়ে বরং ঘাড় সোজা রেখে ফোনটা চোখ বরাবর নিয়ে আসুন। এতে মাথা এবং ঘাড়ের উপর চাপ কম পড়বে।
৫) কয়েকটি ‘ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ়’ করতে পারেন। সর্বোপরি মেরুদণ্ডের সংলগ্ন পেশি সচল রাখতে নিয়ম করে কিছু যোগাসন করতেই হবে। এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে শরীরচর্চা না করে উপায় নেই।
৬) যাঁদের ঘাড়, কোমর বা পিঠে খুব ব্যথা, তাঁরা এক বার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক চিকিৎসা, ফিজিয়োথেরাপি এবং আসন শুরু করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy