যন্ত্রের নীচে হাত রাখলেই গরম হাওয়ায় নিমেষে শুকিয়ে যায় হাত। মোছামুছি বা ছোঁয়াছুঁয়ির বালাই নেই। শৌচালয়ে থাকা ‘টয়েলট পেপার’ ধরতে যাঁদের ভীষণ আপত্তি, তাঁদের কাছেও এই ছোঁয়াহীন পন্থা ভীষণ সুবিধাজনক।
শপিংমল কিংবা অফিসের শৌচালয়ে হাত শুকোনোর যন্ত্রটির ব্যবহার ক্রমশই বাড়ছে। সুবিধা দেখে কেউ কেউ তা বাড়িতেও লাগাচ্ছেন। কিন্তু যন্ত্রে হাত শুকোনোর পন্থা আদৌ নিরাপদ কি?
আরও পড়ুন:
প্যারিসের জীববিদ লরা গঞ্জালেজ় অনলাইনে এ নিয়ে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলছেন, হাত শুকোনোর যন্ত্র থেকেই ছড়িয়ে পড়তে পারে রোগজীবাণু। স্নানঘর বা শৌচালয়ের স্যাঁতসেতে পরিবেশে বেড়ে ওঠা জীবাণু যন্ত্রের হাওয়ার মাধ্যমে হাতেও ছড়িয়ে পড়ে।
কী বলছে গবেষণা?
আমেরিকার কানেক্টিকাট এবং কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটিতে এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। করা হয়েছে পরীক্ষাও। পেট্রি ডিশ (বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত গোলাকার স্বচ্ছ কাচপাত্র) ব্যবহার করে হাত শুকোনোর যন্ত্র চলাকালীন ২৫৪ রকম ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি চোখে পড়েছে। অথচ যন্ত্র বন্ধ করলে সেই সংখ্যা কমছে। গবেষণা বলছে, শৌচালয়ের পরিবেশেই এই ব্যাক্টেরিয়া জন্মাচ্ছে এবং যন্ত্রের ব্যবহারে তা হাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে যত জোরে হাওয়া, ততই ঝুঁকি বেশি। শুধু হাত নয়, পোশাকেও রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে একই ভাবে।
আমেরিকান সোসাইটি অফ মাইক্রোবায়োলজি-র ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় প্রকাশ, গরম হাওয়া রোগজীবাণু বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করছে। এমনকি, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করেও ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণু আটকানো সম্পূর্ণ ভাবে সম্ভব হয় না।
বদলে কী?
বদলে টয়লেট পেপার তুলনামূলক নিরাপদ বলে চিহ্নিত। আবার পরিবেশের কথা ভাবলে টয়লেট পেপারের ব্যবহার কমিয়ে ফেলা দরকার। কারণ, গাছ থেকে টয়লেট পেপার তৈরি হয়। তবে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজ়েশন (হু) জানাচ্ছে, টয়লেট পেপার তুলনামূলক নিরাপদ। কারণ, এটি ভিজে ভাব দ্রুত শুষে নেয় এবং ব্যাক্টেরিয়া বা জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে দেয় না। তা ছাড়া, শৌচালয়ের দরজার হাতল বা কমোডের ফ্লাশ টয়লেট পেপার দিয়ে মুছে নেওয়া যায়, সেটা হ্যান্ড ড্রায়ার বা যন্ত্রে সম্ভব হয় না।